ঢাকা: বিশ্ববাজারে অস্বাভাবিক দরপতন হওয়ায় দেশের বাজারে কমেছে সব ধরনের স্বর্ণের দাম। প্রতি ভরি স্বর্ণে সাড়ে ৩ হাজার টাকা কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। বৃহস্পতিবার থেকে স্বর্ণের এ নতুন দর কার্যকর হবে। ৬ দিনের ব্যবধানে সোনার দাম কমালো সংগঠনটি।
এর আগে গত ৬ই আগস্ট সব ধরনের সোনার দাম ভরিতে বাড়ানো হয়েছিল ৪ হাজার ৪৩২ টাকা। এতে ওই দিন থেকে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম ছিল ৭৭ হাজার ২১৫ টাকা।
নতুন দাম অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম হবে ৭০ হাজার ৫৬৬ টাকা। আগে ছিল ৭৪ হাজার ৬৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ভরি নিতে লাগবে ৬১ হাজার ৩১৮ টাকা, যা আগে ছিল ৬৫ হাজার ৩১৮ টাকা। এ ছাড়া সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম কমে ভরিপ্রতি ৪ হাজার ৪১৫ টাকা করা হয়েছে।
যা আগে ছিল ৪ হাজার ৭১৫ টাকা। সে হিসেবে ভরিপ্রতি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) দাম দাঁড়ায় ৫১ হাজার ৪৯৫ টাকা, যা আগে ছিল ৫৪ হাজার ৯৯৫ টাকা। তবে রুপার দাম প্রতি ভরি ৯৩৩ টাকা অপরিবর্তিত থাকবে।
বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দ্বিলীপ কুমার আগরওয়ালা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞিপ্তিতে বলা হয়, বৈশ্বিক স্থবিরতা, ডলার ও তেলের দরপতন, আন্তর্জাতিক স্বর্ণ বাজারে নজির বিহীন উত্থান-পতন সত্বেও দেশীয় স্বর্ণ বাজারের মন্দাভাব ও ভোক্তা সাধারণের কথা চিন্তা করে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সিদ্ধান্ত মোতাবেক বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশের বাজারে সোনা ও রূপার অলংকারের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৩শে জুলাই সব ধরনের স্বর্ণের ভরিতে ২৯১৫ টাকা করে দাম বাড়েছিল। ওই সময় দাম বেড়ে ২২ ক্যারেট সোনার দাম হয় ৭২৭৮৩ টাকা। ২১ ক্যাটে হয় যা আগে ছিল ৬৯৬৩৪ টাকা এবং ১৮ ক্যারেট ছিল ৬০ হাজার ৮৮৬ টাকা। সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ছিল যা আগে ছিল ৫০৫৬৩ টাকা।
তবে রূপার দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। প্রতি ভরি রূপার দাম ৯৩৩ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাজুস।
এর আগে করোনা মহামারিতে দাম বৃদ্ধির রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে। চলতি মাসের শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে কিছুটা নমনীয়ভাব দেখা যায় মূল্যবান এই ধাতুটির। এরমধ্যে ১১ই আগস্ট একদিনেই প্রতি আউন্স সোনার দাম কমেছে ১১৭ ডলার (প্রায় ১০ হাজার)। এদিন বাজারে প্রতি আউন্স সোনার হাত বদল শুরু হয় ২০২৭ ডলারে আর দিন শেষ হয় ১৯১০ ডলারে নামে। গোল্ড প্রাইসের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এই তথ্য পাওয়া যায়।
৭ই আগস্ট নিউইয়র্ক সময় সকাল ৯টার আগ দিয়ে বাজারে পড়তে শুরু করে সোনার দাম। ওই সময় প্রতি আউন্স সোনা বিক্রি হয় ২ হাজার ৬১ ডলারে। ওই দিন কমতে কমতে ২ হাজার ১৮ ডলারে নামে প্রতি আউন্স সোনার দাম। এরপরে অবশ্য ঊর্ধমুখী প্রবণতা দেখিয়ে সেদিন বাজার শেষ হয় ২ হাজার ৩৫ ডলার। ৮ই আগস্ট আন্তর্জাতিক বাজারে মোটামুটি এই দামের আশেপাশেই সোনা বিক্রি হয়। দিনও শেষ হয় ২ হাজার ৩৫ ডলারেই। ৯ আগস্ট এই দামে বাজারে এলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পড়তে থাকে মূল্যবান এই ধাতুর দাম। নেমে আসে ২ হাজার ২৫ ডলারে।
এরপর ওঠানামার মধ্য দিয়ে ২ হাজার ৩০ ডলারের সেদিনের লেনদেন শেষ হয় সোনার। ১০ই আগস্ট বেশ খানিকটা চড়ে যায় বিনিয়োগের নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে সমাদৃত সোনার দাম। সেদিন বেশিক্ষণ ২ হাজার ৪৬ ডলারে বিনিয়োগকারীদের হাত বদল হয় প্রতি আউন্স সোনা। এরপর পড়তে পড়তে দাম নেমে আসে ২ হাজার ২৯ ডলারে।