গাজীপুরে ডিজিটাল মামলায় গ্রেপ্তারের পৌনে দুই মাস পর তিন সাংবাদিক রিমান্ডে

Slider তথ্যপ্রযুক্তি


গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানা পুলিশের তদন্ত পরিদর্শক মোহাম্মদ আফজাল হোসাইনের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় গ্রেপ্তার থাকা তিন সাংবাদিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে এনেছে পুলিশ।

গেল মঙ্গলবার কারাগার থেকে দৈনিক যোগফলের গাজীপুর সদর প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান খান, স্টাফ রিপোর্টার মো. মোজাহিদ ও দৈনিক মুক্ত বলাকার স্টাফ রিপোর্টার মো. মিলন শেখ নামের ওই তিন সাংবাদিককে জয়দেবপুর থানায় রিমান্ডে আনা হয়।

গ্রেপ্তারের পৌনে দুই মাস পর ওই তিন সাংবাদিককে রিমান্ডে আনা হল। গত পহেলা জুন মামলাটি জয়দেবপুর থানায় দায়ের হয়। ওই মামলায় অন্য আসামিদের মধ্য দৈনিক যোগফলের সম্পাদক ও প্রকাশক আসাদুল্লাহ বাদল বর্তমানে জামিনে আছেন। মামলায় আর এক আসামি সাহিদা আক্তার বাদির বিরুদ্ধে ঘুস নেওয়ার অভিযোগে বক্তব্য দিয়েছিলেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) উপ-পরিদর্শক বিশ্বজিৎ জানান, ‘জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্তের স্বার্থে রিমান্ডে আনা তিন সাংবাদিকের মধ্য একজনের মোবাইল ফোনের পাসওয়ার্ড খোলা সম্ভব হচ্ছিলো না। এ কারণে এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ প¦ার্শবর্তী শ্রীপুর থানা পুলিশের এক কর্মকর্তার কাছে মো. মোজাহিদকে নেওয়া হয়।’
বিশ্বজিৎ আরও জানান প্রায় ২০ দিন আগে তিনি এই মামলার আইও নিয়োজিত হয়েছেন। রিমোন্ডে নেওয়া আসামি মোজাহিদের মোবাইলের পাসওয়ার্ড খুলতে পারছিলেন না বলে তিনি শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান খানের সহায়তা নিতে আসামিসহ শ্রীপুর থানায় নিয়েছেন।

আইটি বিশেষজ্ঞ প্রান্ত রায় জানিয়েছেন, তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান না থাকলে কারও সহায়তা নিয়ে জোড়াতালি দেওয়া সম্ভব হলেও প্রকৃত অবস্থানে পৌঁছা সম্ভব নয়।

এক থানা পুলিশের আবেদনে রিমান্ডে আনা আসামি অন্য থানায় নিতে গেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের প্রয়োজন আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আগে দেখতে হবে কি মামলায় রিমান্ডে আনা হয়েছে। তা ছাড়া হাওয়া খেতে খেতে এক থানা থেকে আর এক থানায় গেলে সমস্যা কি?

এ ব্যাপারে দৈনিক যোগফলের সম্পাদক ও প্রকাশক আসাদুল্লাহ বাদল জানান, গেল ৩১ মে রাত এগারোটা ২০ মিনিটে মামলার চুড়ান্ত সময় দেখানো হয়েছে। অথচ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় তার [আসাদুল্লাহ বাদল] ফেসবুকের স্ক্রিনশর্ট দেখানো হয়েছে ওই সময়ের অনেক পরের। যা মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। সংবাদ প্রকাশ হয়নি অথচ শুধু ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে একটি সংবাদপত্রের সম্পাদক ও প্রকাশককে আসামি করা পুলিশের ক্ষোভের বহিপ্রকাশ।

এই মামলা দায়ের হওয়ায় সম্পাদক পরিষদ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১৩ জন শিক্ষক, ৩৩টি ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, টিআইবি, আর্টিকেল নাইনটিন, সিপিজে, রিপোটার্স উইদাউট বর্ডারসসহ আরও কয়েকটি সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *