অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মিঠু: প্রতারক সাহেদের ছবি কোন বিষয় না। হিলারি ক্লিনটনের সাথেও বহু বাংলাদেশির ছবি আছে! ইদানিং নেতারা আগের চাইতে সচেতন। ক্রস ফায়ারের উপযুক্ত, কিংবা চিহ্নিত কোন বিতর্কিত ব্যক্তির সাথে তারা ছবি তুলতে চান না ।
তবে কে কখন ছবি তুলে নিচ্ছে এখন তা বুঝাও কঠিন। আমার সাথে কার কার ছবি আছে আমি জানি না, বড় বড় নেতারাতো আরও কম জানবে, এটাই স্বাভাবিক। কেউ ছবি তুলতে চাইলে না করাওতো যায় না।
সাহেদের অনেকের সাথেই ছবি দেখা যাচ্ছে । ছবি থাকতেই পারে। কারণ সে চিহ্নিত প্রতারক ছিল না এতো দিন। সে বর্ণচোরা। চুল সাদা করে রাখায় তাকে তার বয়সের চাইতেও বেশি বয়স্ক দেখা যায় ।
এই প্রতারকের উদ্দেশ্যই ছিল ছবি তোলা এবং সে ছবিকে কাজে লাগিয়ে রোজগার করা। সে ছিল আপাদমস্তক একজন ধান্দাবাজ ।
তার পুরানো কিছু টকশো দেখলাম। ভাবটা ছিল যেনো সে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কেউ! মনে হচ্ছিল ওবায়দুল কাদের সাহেবের কাছাকাছি তার অবস্থান!
অথচ তার সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পরিচয় ছিল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য।
উপ কমিটি কিন্তু কমিটি না, এটি বুঝতে অনেকেই আমরা ভুল করি। আমি নিজেই উপ কমিটিতে ছিলাম। সে উপ কমিটিতে আকবর বাদশা আর হরিপদ কেরানীর কোন তফাৎ ছিল না, তাই সেই পরিচয় ব্যবহার করতাম না।
কথা হচ্ছে এ সকল মানুষ উপ কমিটিতে জায়গা পায় কেমন করে? সে আগে কোথায় রাজনীতি করতো? ছাত্রলীগ ছিল না ফ্রিডম পার্টি ছিল? এসব খবর না নিয়েই কমিটিতে কেন কাউকে নেয়া হবে ? কেন্দ্রীয় এবং ঢাকা মহানগরীর বহু সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ঘুরে বেড়াচ্ছে পরিচয় বিহীন। আর ধান্দাবাজ পদবী পেয়ে টকশো করে বেড়াচ্ছে!
এ সমস্ত ধান্দবাজের কাছে দল কিংবা দেশ, কোন কিছুরই মূল্য নেই। টাকার জন্য এরা সব করতে পারে। প্রয়োজনে বন্দুকের নল ঘুরিয়ে ধরতে তাদের এক মিনিটও লাগবে না ।
আওয়ামী লীগ নেতাদেরও দলের প্রতি আগের মতো অনুভূতি আছে বলে মনে হচ্ছে না। তারা অনেকেই, অনেক বেশি নির্লজ্জ হয়ে গেছেন এখন।
আগে তারা আদর্শবাদী একটা মুখোশ পরতেন, এখন তাও ফেলে দিয়েছেন! তাদের মাংসবাদী তৎপরতা এবং গোষ্ঠিচিন্তা এখন স্পষ্ট । তাদের অপকর্ম তারা গুটিকতক লোক ছাড়া সবাই দেখতে পাচ্ছে!
দুর্ভাগ্যজনক সত্য যে, আমাদের অনেক নেতাই ভাবেন না যে জনগণের মতামত, ভাবনা, সমালোচনা বা সমর্থনের কোন মূল্য আছে!
এই প্রতারক সাহেদের একটা ছবি পেলাম, ছবিটি মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে। কিন্তু রাষ্ট্রপতির দিকে তার কোন মনোযোগ নেই, তার দৃষ্টি শুধু ক্যামেরার দিকে!
ছবিতে যে বরকত আছে, এইটা এই বেটা ভালোই বুঝতে পেরেছিল। তবে আমার ধারণা সে টিকে যাবে। কারণ চামচার কোন বিনাশ নাই! চামচা যুগ যুগ টিকে থাকে…
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখক : সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগ এবং যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ।