জামালপুর:জামালপুরে সোমবার নারীসহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এবং একজন করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। করোনায় মারা যাওয়া ৪০ বছর বয়সী ব্যক্তির বাড়ি দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভায়। আর উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ২৪ বছরের নারীর বাড়ি জামালপুর পৌরসভায়।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহের এস কে হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দেওয়ানগঞ্জের ওই ব্যক্তি। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার কে এম শফিকুজ্জামান।
জানা গেছে, নমুনা পরীক্ষা শেষে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে গত বুধবার (১৫ এপ্রিল) রাতে ময়মনসিংহের এস কে হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে পাঠায় জামালপুরের স্বাস্থ্য বিভাগ। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাসহ রোগীটি দাঁড়াতে অক্ষম হওয়ায় ভেন্টিলেটরের সাহায্যে সাপোর্ট দেয়ার জন্য তাকে ময়মনসিংহে পাঠানো হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন জামালপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার আবু সাঈদ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।
ওই ব্যক্তি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ থেকে দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার চরভবসুর ঠোটাপাড়ার গ্রামে নিজবাড়িতে আসেন। নারায়ণগঞ্জ হতেই তিনি সর্দি-জ্বর নিয়ে বাড়িতে আসলে খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) তার নমুনা সংগ্রহ করে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। বুধবার (১৫ এপ্রিল) নমুনা পরীক্ষা শেষে তার দেহে করোনাভাইরাস পজেটিভ পাওয়া যায়। রোগীর অবস্থার অবনতি দেখে তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে না নিয়ে ওই রাতেই একই অ্যাম্বুলেন্সে ময়মনসিংহের এস কে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে স্থানাস্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে জামালপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার আবু সাঈদ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, দেওয়ানগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত ওই ব্যক্তিটিকে ভেন্টিলেটরের সাহায্যে সাপোর্ট দেয়ার জন্য ময়মনসিংহের এস কে হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে পাঠানো হয়েছিল। সোমবার রাতে ওই রোগী মারা গেছেন বলে জানিয়েছে এস কে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তার পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে। পরিবার লাশ গ্রহণে রাজি হলে আইইডিসিআরের নিয়মানুযায়ী তাকে নিজ বাড়িতেই দাফন করা হবে। তা না হলে ময়মনসিংহেই দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।
করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু
জামালপুর পৌরসভার বগাবাইদ এলাকায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাত ৭টার দিকে ঢাকাফেরত ওই নারী বগাবাইদ এলাকায় নিজ বাড়িতে মারা যান। খবর পেয়ে রাতেই ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ঘটনায় বগাবাইদ এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
মৃত ওই নারীর বাবা শামীম মিয়া সাংবাদিকদের জানান, রক্ত শূন্যতার কারণে মারা গেছেন তার মেয়ে। তবে ঢাকা থেকে তার মেয়ের বাড়ি ফেরার ব্যাপারটি সুকৌশলে এড়িয়ে যান তিনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই নারীর দু’বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তার স্বামী জিয়া উদ্দিন মামুন তাকে ছেড়ে প্রায় বছরখানেক আগে ঢাকা চলে যান। তিনিও কয়েকমাস আগে ঢাকা গিয়ে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। ছয় দিন আগে তিনি ঢাকা থেকে সর্দিজ্বর নিয়ে বগাবাইদ এলাকায় তার বাবার বাড়িতে ফেরেন।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাক্তার আবু সাঈদ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, স্বাস্থ্য বিভাগকে ওই নারীর মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্থানীয় লোকজন। পরে রাত ৯টার দিকে মৃত ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।