কলকাতা: বঙ্গবন্ধুর খুনী আব্দুল মাজেদের ধরা পড়া এবং ফাঁসির এক সপ্তাহের মধ্যে আরেক খুনী রিসালদার (বরখাস্ত) মোসলেহ উদ্দিনকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে গোয়েন্দা মহলে জোর গুঞ্জন চলছে। একটি সুত্রের দাবি, মাজেদের মত রিসালদারও দীর্ঘদিন ধরে ভারতে লুকিয়ে রয়েছেন। মাজেদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ভারতের গোয়েন্দা এজেন্সিগুলির হাতে আসার পরই গোয়েন্দারা নড়েচড়ে বসে।
আর এরপরই উত্তর ২৪ পরগণার একটি আধা শহর এলাকা থেকে মোসলেহ উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে। সে সেখানে ইউনানি চিকিৎসক সেজে ভাড়া বাড়িতে থাকছিল । গোয়েন্দারা মোসলেহ উদ্দিনকে হেফাজতে নেবার পরই তাকে সীমান্তের কোনও এক অরক্ষিত অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে গোপনে তুলে দেয়া হয়েছে বলে কোনও কোনও গোয়েন্দা সুত্রে দাবি করা হয়েছে।
গোয়েন্দাদের একংশের মতে, লকডাউনের সময়ে মোসলেহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোরগোল ফেলে দিতে চায়নি ভারত। বরং অত্যান্ত গোপনে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব সংবাদেও কোনও সত্যতা কোনও মহলই স্বীকার করেনি।
তবে সরকারিভাবে পুলিশ বা কোনও গোয়েন্দা সংস্থা এ ব্যাপারে কোন কথা বলে নি। আবার অন্য একটি সুত্রের মতে, মাজেদ গ্রেপ্তার হবার খবর জানার পরই মোসলেহ উদ্দিন পালিয়ে গিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার ফেরারী হওয়া ফাঁসির আসামি এই মোসলেহ উদ্দিন। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট ৩২ নম্বর ধানমন্ডীতে মুজিবের বাড়িতে অভিযান চালানো দলটির সামনের সারিতে ছিল মোসলেহ উদ্দিন। অনেকের দাবি, মোসলেহ উদ্দিনই গুলি করে হত্যা করেছিল মুজিবকে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার অভিযোগে এখন পর্যন্ত সৈয়দ ফারুক রহমান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমেদ ও আব্দুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এ ছাড়া ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত আরেক আসামি আজিজ পাশা ২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা গিয়েছে। আর ফেলার আসামীদের মধ্যে এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী কানাডায় ও এ এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। খন্দকার আবদুর রশিদ ও শরিফুল হক ডালিম কোথায় রয়েছে সে সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই। তবে মোসলেহ উদ্দিন দীর্ঘদিন ভারতেই লুকিয়ে ছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে।