শারমিন সরকার, ঢাকা: অফিসের কাজ, সংসারের কাজ, সন্তান সামলাতে গিয়ে সবসময়েই হিমশিম খেতে হয় নারীদের। করোনাভাইরাসের কারণে কাজের ঝামেলা আরো বেড়ে গেছে নারীদের। বিশেষ করে বিবাহিত কর্মজীবী নারীরা হিমশিম খাচ্ছেন সবদিক সামলাতে গিয়ে।
বিশ্বের অধিকাংশ অফিসই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে ছুটি দিয়েছে কর্মীদের।নিরাপত্তার জন্য অফিসে যাওয়া থেকে বিরত থাকলেও সমস্ত কাজ ঘরে বসেই করতে হচ্ছে। আর এর ফলে কর্মজীবী নারীদের কাজ বেড়েছে দিগুণ।
অফিসের কাজের পাশাপাশি করতে হচ্ছে রান্না, ঘর পরিষ্কার, কাপড় ধোয়ার কাজ। সন্তানদেরও করতে হচ্ছে দেখাশোনা। করোনার কারণে বাসার গৃহকর্মীকে ছুটি দেয়ায় ঘর পরিষ্কারের ক্ষেত্রেও বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন হচ্ছে কর্মজীবী নারীর। কিছুক্ষণ পরপর জীবাণুনাশক দিয়ে ঘরের আশে পাশে, দরজার হ্যান্ডেল, বাথরুম পরিষ্কারের ঝামেলা তো আছেই!
শুধু কর্মজীবী নারীই নয়, সাধারণ গৃহিনী যারা আছেন করোনার কারণে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তাদের কাজও। সন্তানরা যেই সময়টাতে স্কুলে থাকে, গৃহিণীরা অবসর পান। কিন্তু স্কুল ছুটি থাকায় সেটা মিলছে না। স্বামী ঘরে থাকায় বেড়ে গেছে আরও কিছু কাজ। দম ফেলার ফুসরত নেই যেন। কোনো কোনো বাড়ির পুরুষ সদস্যরা কিছুটা সাহায্য করলেও কাজের মূল চাপটা থাকে নারীর কাঁধেই।
দেশে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নারীদের ক্ষেত্রে এই চাপ আরও বেশি। ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। ঘরে ফেরার পর যত্ন নিতে হচ্ছে সন্তান, বৃদ্ধ বাবা-মা কিংবা শ্বশুর-শাশুড়ির। বিশাল ঝুঁকির মুখে রয়েছে এই খাতের নারীরা। সেই সঙ্গে নিজের অজান্তেই প্রিয়জনদের আক্রান্ত করার ভয় তাড়া করছে তাদের।
অতিরিক্ত কাজের চাপে হুমকির মুখে পড়েছে নারীদের স্বাস্থ্য। ব্যস্ততায় নিজের প্রতি খেয়াল রাখার সময় মিলছে না অধিকাংশ নারীর। ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও হুমকির মুখে।
বিষয়টি শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্বের ক্ষেত্রেই এখন প্রযোজ্য। নারী একাই ঘরের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা, খাদ্য, পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলো দেখছেন। করোনাভাইরাসের দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন নারীরা। এরকম কতদিন চলবে সেটাও অনিশ্চিত।