বিদেশে ৯২ বাংলাদেশির মৃত্যু

Slider জাতীয় সারাদেশ


ঢাকা: করোনাভাইরাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন পর্যন্ত ৯২ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রেই মারা গেছেন ৬৩ জন। এ ছাড়া দেশটিতে আরও ২০০ বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের বেশির ভাগই নিউইয়র্কের বাসিন্দা। যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি মারা গেছে যুক্তরাজ্যে। নতুন করে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যুর ফলে সেখানে বাংলাদেশির সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে।

এ ছাড়া সৌদি আরবে ও ইতালিতে ৩ জন, কাতারে ৩ এবং স্পেন, সুইডেন, লিবিয়া ও গাম্বিয়ায় একজন করে বাংলাদেশি মারা গেছেন। সিঙ্গাপুরে গতকাল একদিনে ২৬ বাংলাদেশি আক্রান্তের খবর গেছে।

এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মৃত্যুবরণ করা বাংলাদেশিদের জন্য রাষ্ট্রীয় শোক প্রস্তাব জানানোর দাবি জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু)। করোনায় মারা যাওয়াদের জন্য ১২ এপ্রিল দেশে এবং বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা সকাল ৯টায় (যার যার সময়) ১ মিনিট নীরবতা পালন করার প্রস্তাব দিয়েছে রামরু। সেই সঙ্গে তাদের জন্য ঋণ তহবিল গঠনেরও সুপারিশ করা হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। গতকাল এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ ছাড়াও কিছু সুপারিশ উত্থাপন করেন রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী।

রামরুর অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে আছে- অভিবাসনের দেশে সুরক্ষা, অভিবাসীদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখা, বায়রা এবং রিক্রুটিং এজেন্সির ভূমিকা রাখা, ফেরত আসা অভিবাসীর ম্যাপিং ও রিটার্নি ডাটাবেজ তৈরি করা, রেমিট্যান্সের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে রেমিট্যান্স প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা সচল রাখা, সরকারি বিনিয়োগ, বিদেশ প্রত্যাগত অভিবাসীদের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করা।

রামরুর লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অভিবাসীরা আশা করছেন করোনাভাইরাসে যারা মারা গেছেন তাদের অবদান তুলে ধরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শোক প্রকাশ করবে। দেশের অভ্যন্তরে রপ্তানিমুখী শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার জন্য সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন প্রশংসনীয় বলেও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে বিদেশে কর্মহীন অভিবাসীদের পরিবারের জন্য বিনা সুদে ঋণ ও ক্ষেত্রবিশেষে অনুদানের জন্য তহবিল গঠনের দাবি জানায় রামরু। এতে বলা হয়, করোনা সংক্রমণের উৎস হিসেবে মূলত অভিবাসীদেরই চিহ্নিত করা হচ্ছে। অন্যান্য জনগোষ্ঠী যেমন ব্যবসায়ী, পর্যটক, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত যাত্রীদের বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি। অনেক ক্ষেত্রে তারাও কোয়ারেন্টাইনে আসেননি কিন্তু তা নিয়ে তেমন তোলপাড় হয়নি।

রেমিট্যান্স পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের তুলনায় এ বছরের প্রথম ৩ মাসে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ১২ শতাংশ। সামনে তা আরও কমবে। রেমিট্যান্স প্রবাহে নিম্নগতি জাতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার পাশাপাশি রেমিট্যান্সনির্ভর পরিবারগুলোতে দেখা দেবে ক্রান্তিকালীন দারিদ্র্য। এসব পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস স্থানীয় বাজারের ওপর প্রভাব ফেলবে। তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, দীর্ঘমেয়াদে করোনাভাইরাসের সব ফলাফলই কিন্তু নেতিবাচক হবে না। করোনাভাইরাসের কারণে পরবর্তীতে কিছু নতুন কাজেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। জার্মানি মেডিকেল স্টাফের স্বল্পতা মেটাতে অভিবাসী ও শরণার্থীদের ব্যবহার করছে। আমেরিকা, জাপান, কানাডা এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ তাদের মেডিকেল সামগ্রী, ডাক্তার, নার্স, মাইক্রোবায়োলজিস্ট, বায়োকেমিস্ট এবং ল্যাব টেকনেশিয়ানের ঘাটতির কথা উল্লেখ করছে। এসব ক্ষেত্রে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভবিষ্যতে অভিবাসনের সুযোগ তৈরি করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *