ডেস্ক : ফেসবুকের ভুয়া আইডি বা জাল প্রোফাইলের অন্তরালে দেহ ব্যবসার জাল ছড়িয়েছে রাজধানীতে৷ সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে ‘আন-সোশ্যাল’ কর্মকাণ্ড ছড়িয়েছে শহরতলিতেও৷ আর এর হাত ধরেই আক্ষরিক অর্থে রাজধানী হয়ে উঠেছে ‘তিলোত্তমা’ আধুনিকতায় এবং লাগামছাড়া জীবনযাপনে৷ কিন্তু, সাদা চোখের এই অপরাধ রোধে অপরাগ পুলিশ-প্রশাসন৷ কারণ, অভিযোগ না পেলে পুলিশের কিছুই করার নেই৷ প্রশাসনের কথায়, কোনও ইউজার অভিযোগ করলেই পুলিশ জাল প্রোফাইলকে ডি-অ্যাক্টিভ করার জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করতে পারে৷
পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে রাজধানীর বুকে কীভাবে চলছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কলগার্লের ব্যবসা? ফেসবুক ফ্রেন্ডস ফাইন্ডারে জনৈক মুনমুনের নাম তালাশ করলেই, সাদা পাতিয়ালা পরনে, এক মহিলাকে পাওয়া যাবে৷ গৃহবধূ বলে পরিচয় দেওয়া এই ফেসবুক ইউজার নিজের ওয়ালেই স্বীকার করেছেন, তিনি দেহ ব্যবসা করেন৷ এই জাল ইউজার আদতে একজন যুবক৷ ফেসবুকের মাধ্যমে কলগার্ল সরবরাহ করেন। ফেসবুকের ‘দেওয়াল’ এবং ইনবক্স চ্যাটের মাধ্যমেই তিনি মহিলা সংগ্রহ করেন, ক্লাইন্ট ধরেন৷ নিশ্চিন্ত এবং নিরাপদে৷
মুনমুনের মতো নাতাশাও ফেসবুকের মাধ্যমেই কলগার্লের ব্যবসা জাঁকিয়ে বসেছেন৷ তবে, তার ক্লাইন্ট ধরার পদ্ধতিটা একটু অন্য ধরনের৷ এই জাল প্রোফাইলের সঙ্গে বন্ধুত্বস্থাপনের পর অনলাইন চ্যাটের মাধ্যমে সে পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে গল্প জুড়ে দেয়৷ ধীরে ধীরে সেই আলাপ পৌঁছয় যৌনতা প্রসঙ্গে৷ এরপরেই কলগার্ল সরবরাহ করার হাতছানি মেলে৷ ১৬ থেকে ৪০-এর কলেজ পড়ুয়া কিংবা গৃহবধূ, সব ধরনের কলগার্লই তিনি সরবরাহ করতে পারেন৷ স্বাভাবিকভাবেই ফেসবুকের কল্যাণে মিলে যায় ‘মালদার’ ক্লাইন্টও৷
শুধু মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমেই নয়, সরাসরি ক্লাইট ধরতেও কলগার্লের একাংশ ফেসবুকের নিরাপদ ব্যবস্থাকেই বেছে নিয়েছে৷ অত্যাধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির হাত ধরেই জাঁকিয়ে চলছে এই আধুনিক যৌন ব্যবসা৷ রাজধানীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শহরতলির মেয়েরাও ফেসবুকের মাধ্যমে এইপথে রোজগার করছে৷ দীপান্বিতা নিজেকে মেয়ে বলে পরিচয় নিয়ে ফেসবুকের বন্ধুদের আহ্বান জানাচ্ছে৷ তবে, তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন, ফেসবুকের এই প্রোফাইলটি জাল৷ সঙ্গের স্বল্পবাসের যৌনতা ভরা ছবিগুলি তাঁরই৷ এই ছবিই তাঁর ক্লাইন্ট ধরতে সুবিধা করে বলেই স্বীকার করেন৷ তিনি জানালেন, তাঁর মতো অনেক মেয়েই জাল প্রোফাইলের মাধ্যমে রোজগার করছেন৷ এতে সুবিধা হচ্ছে সরাসরি ক্লাইন্ট ধরতে পারায় ‘দালালি’ বা মধ্যস্থতাকারীকে কোনও কমিশন দিতে হয় না৷
মুনমুন-নাতাশা-দীপান্বিতাদের মতো ফেসবুকের হাজারো জাল প্রোফাইল ব্যবহার করে রমরমিয়ে চলছে দেহ ব্যবসা৷ এর জন্য তাদের গিয়ে দাঁড়াতে হচ্ছে না রাস্তার মোড়ে৷ অথবা স্টেশনের সামনে৷ রীতিমতো ঘরে বসে, স্মার্টফোন হাতে পথ চলতে চলতেই মিলে যাচ্ছে ‘মালদার’ ক্লাইন্ট৷ আর রাতের রাজধানীকে করে তুলছেন আরও রঙিন৷ সত্যিকারের সাবালক হয়ে হচ্ছে ‘‘তিলোত্তমা’!