রাতুল মন্ডল শ্রীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে মূল ভলিউমে রেজিষ্ট্রি না করে বিয়ে পড়ানোর অভিযোগ এনে কাজীর বিচার প্রার্থনা করেছেন এক নারী।
২ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রাবেয়া খাতুন নামের ওই নারী।
অভিযুক্ত কফিল উদ্দিন উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের তাইজুদ্দিনের ছেলে। রাবেয়া খাতুনের দাবী, গত ২০১৬ সালের ৮ মে পৌর এলাকার লোহাগাছ গ্রামের শাহ আলমের ছেলে আকরাম হোসেনের সাথে বিয়ে হয় তার। শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন স্থানে কাজী কফিল উদ্দিনের অফিসে এ বিয়ে পড়ানো হয়েছিল। বিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করার সময় কাজী কর্তৃক প্রদত্ত রিসিটে বহি নং-এ, বালাম নং-৩/১৫ ও পাতা নং-৬৯ ব্যবহারের কথা লিখা হয়েছে। বিয়ের পর আমাদের দাম্পত্য জীবনে শিশু ছেলে জন্ম নেয়ার পর থেকে যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী নানা নির্যাতন করতে থাকে। বিষয়টি মিমাংসার জন্য আদালতে দারস্থ হলে আদালতের নির্দেশক্রমে কাবিন নামা সংগ্রহের জন্য কাজীর কাছে যাই। এসময় কাজী তা দিতে অস্বীকার করে জানান মূল ভলিউমে এ বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন নাই।
রাবেয়া আরো জানান, এ শিশু ছেলেটাকে নিয়ে আমি এখন কোথায় যাবো। প্রশাসনের কাছে আমি এ কাজীর বিচার চাই।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য কফিল উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে প্রথমে তিনি ফোন রিসিভ করে বলেন, ব্যস্ত আছি পরে কথা বলবো। এরপর থেকে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এর কয়েক ঘন্টা পর সংবাদ না করার হুমকি দিয়ে আমাদের সময় পত্রিকার শ্রীপুর উপজেলা প্রতিনিধি আলফাজ সরকার আকাশকে ০১৭১৮-২৪৩৬০৪ নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে নিজেকে একজন সাংবাদিক দাবী করে তার ভাই আবুল কালাম বলেন, কাজী আমার বড় ভাই। সংবাদ করা যাবেনা। তুমি তো আমাকে চিনোনা। সামনে আসলে বুঝতে পারবে আমি কে।
গোসিংগা ইউনিয়নের দায়িত্বরত কাজী আবু সাদেক জানান, কফিল উদ্দিনের নামে এর আগেও কয়েকজন নারীর এমন অভিযোগ ছিল। এসকল কাজীর কারনে আমরাও নেতিবাচক দৃষ্টিতে পড়ে থাকি।
পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডে দায়িত্বরত কাজী মাহবুবুল আলম জানান, উল্লেখিত তারিখে এ নামে কোন বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে কিনা আমার জানা ছিলনা । পরে ওই নারীর কাছে থাকা একটি রিসিট দেখে বুঝতে পারছি যে, আমার সহি ও সীল জাল জালিয়াতি করে এ বিয়ে পড়ানো হয়েছিল। এ বিষয়ে আমি আইনী ব্যবস্থা নিবো।
উপজেলা কাজী সমিতির সভাপতি আলী আকবর সরকার জানান, আমার জানা মতে কফিল উদ্দিন নামে এ উপজেলায় কোন কাজী নেই। তবে, এ নামে একজন কাজী কয়েকটি বিয়ে পড়ানোর সংবাদ পেয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে এর বিচার প্রার্থনা করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামসুল আরেফীন জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনী প্রক্রিয়া গ্রহন করা হবে।