করোনাভাইরাস বিদেশ থেকে আসা সব যাত্রীকে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত

Slider জাতীয় সারাদেশ


ঢাকা: প্রাণঘাতি নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এখন থেকে বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে কেউ বাংলাদেশে প্রবেশ করলে বন্দরে ‘স্ক্রিনিংয়ের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) আজ এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। এতদিন শুধু চীন থেকে আসা ব্যক্তিদের পরীক্ষা করা হয়েছে। শনিবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আইইডিসিআরের সংবাদ সম্মেলনে এর পরিসর বাড়ানোর কথা জানান আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

তিনি বলেন, আসলে চীন এবং আরও কয়েকটি দেশের যাত্রীদের এই স্ক্রিনিং কার্যক্রমে আনলেই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু আমরা অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে এটা চালু করেছি। এটা সব দেশের ফ্লাইটের ক্ষেত্রেই শুরু হয়েছে। তবে এটা নিয়ে ভীত হওয়ার কিছু নেই।
এটা বাড়তি সতর্কতা। শুক্রবার থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এটি কতদিন ধরে চলবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান আইইডিসিআর পরিচালক।

বাংলাদেশের সবগুলো বন্দরে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং করার সক্ষমতা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আছে কি না- এমন প্রশ্নে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, বিভিন্ন এয়ারলাইন্স, বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সহযোগিতায় এ কাজটি করা হচ্ছে। আমরা এয়ারলাইন্সগুলোর সহযোগিতা নিচ্ছি। ফ্লাইটের মধ্যে যে ডিক্লেয়ারেশন ফর্ম দেয়া হয়, তাতে এয়ারলাইন্সগুলো সহায়তা করে। আমরা সম্মিলিতভাবেই করছি। এখানে এয়ারলাইন্সগুলোর সহযোগিতা খুবই জরুরি। যে বন্দরে থার্মাল স্ক্যানার নেই, সেখানে আমরা হ্যান্ডহেল্ড স্ক্যানার দিয়েছি। থার্মাল স্ক্যানার এবং হাত দিয়ে যেটা করা হয়- দুটোর কার্যক্রম একই। বিমানযাত্রীদের বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের মধ্য দিয়ে নেয়ার পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের একটি কার্ড পূরণ করতে হচ্ছে। থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষায় কোনো যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি পাওয়া গেলে তাকে প্রথমে বিমানবন্দরের পর্যবেক্ষণ কক্ষে রাখা হচ্ছে। পরে প্রয়োজনে কুর্মিটোলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চীন থেকে কেউ জ্বর না নিয়ে এলেও আসার ১৪ দিনের মধ্যে যদি কারও জ্বর আসে, তাদের আইইডিসিআরে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শনিবার সকাল পর্যন্ত ৮ হাজার ৪৮৪ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করলেও কারও দেহে এন করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়নি। চীনের উহান থেকে আসা ৩১২ বাংলাদেশির মধ্যে আশকোনা হজক্যাম্পে থাকা ৩০১ জনের সবাই সুস্থ আছেন। সিএমএইচে থাকা ১১ জনের অবস্থাও ভালো বলে জানান অধ্যাপক ফ্লোরা। করোনাভাইরাস আতঙ্কে ঢাকায় মাস্ক ব্যবহার বেড়ে গেলেও তার প্রয়োজন এখনই দেখছেন না অধ্যাপক ফ্লোরা। তিনি বলেন, রোগী এবং রোগীকে যারা সেবা করবেন তারা ছাড়া আর কারও মাস্ক ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজন নেই। চীনে অনেকে মাস্ক ব্যবহার করে ঘুরছে। এর কারণ চীনে অনেকে আক্রান্ত বিধায় এই রোগ অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি, কোনো ভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি। এ কারণে মাস্ক পরার কোনো প্রয়োজন নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *