ঢাকা: ‘আমি মনে করি আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব সুবিধা পায় পৃথিবীর কোনও দেশ এত অল্প খরচে পড়াশোনোর এত সুযোগ দেয় না। এটা সত্য, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসন আছে। কিন্তু টাকা দিচ্ছে কারা। টাকা তো সরকার দিচ্ছে। সরকারের টাকা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে যায়। সেখান থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। একজন শিক্ষার্থীর মাসে মাত্র ১৫০ টাকা খরচ হয়। কিন্তু এই টাকায় কি উচ্চশিক্ষার খরচ হয়? প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কত লাখ টাকা খরচ হয় প্রতি সেমিস্টারে। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কত লাগে। সে টাকা যোগান দেয় সরকার। দুই লাখ আড়াই লাখ টাকা খরচ হয় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পেছনে। ইঞ্জিনিয়ার, মেডিক্যাল ও কারিগরিতে খরচ আরও বেশি হয়। সব টাকা তো সরকারের পক্ষ থেকে যাচ্ছে। কাজেই সেখানে ডিসিপ্লিন দরকার। শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা পাবে, নিজেদের জীবনকে উন্নত করবে সেটাই আমরা চাই।’- পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক আন্দোলনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শ্রমিক লীগের ১৩তম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু আমরা দেখি অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নাকি আমরা বুঝি না। যারা কথা বলছেন তারাই বোঝেন। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন তারাই বোঝেন। পড়াশোনা নষ্ট করে স্ট্রাইক করে দিনের পর দিন কর্মঘণ্টা নষ্ট করবেন, যারা ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ব্যাহত করবেন তারাই বোঝেন। আর বুঝবো না আমরা। এটা তো হয় না। অর্থ দেবে সরকার, সব রকম উন্নয়ন প্রকল্প সরকার করবে। সেটা নিতে খুব ভালো লাগবে আর সরকার সেখানে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না এটা কখনও হতে পারে না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘কথায় বলে- স্বাধীনতা ভালো তবে বালকের জন্য নহে। এটাও মাথায় রাখতে হবে। কাজেই আমি মনে করবো এ ধরনের বালক সুলভ কথাবার্তা না বলাই ভালো। বরং ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করবে, তাদের সময় যেন নষ্ট না হয়, উপযুক্ত সময়ে ভালো রেজাল্ট করে জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে সেটাই আমরা চাই। কাজেই উসকানি দিয়ে ছাত্রদের বিপথে নেওয়া আর মুখরোচক কথা বলা এটা কখনও কেউ মেনে নিতে পারে না। তা যদি করতে হয় তবে নিজেদের বেতন নিজেদের দিতে হবে। নিজেদের খরচ নিজেরা চালাবে। সরকার সব টাকা বন্ধ করে দেবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইদানীং দেখছি, কোনও কথাবার্তা নাই ব্যবস্থা নেওয়ার পরও কয়েকজন মিলে অহেতুক অভিযোগ তোলে। আইনে আছে- কারও বিরুদ্ধে কেউ যদি কোনও অভিযোগ তোলে সেটা যদি প্রমাণিত না হয় তবে সেই অভিযোগকারীর বিচার হয়, সাজা হয়।’