ষ্টাফ করেসপন্ডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ ২৪.কম
গাজীপুর অফিস: গাজীপুর সদর উপজেলায় বেশ কয়েকটি স্থানে রাতভর চলছে উলঙ্গ নৃত্য, অশ্লীল সঙ্গীত, জুয়া আর মাদকের রমরমা ব্যবসা চলছে।
কোন অনুমতি ছাড়াই পুলিশী প্রহরায় চলছে এসব অসামাজিক কর্মকান্ড। মিডিয়া তোলপাড় শুরু করলে স্থানীয় প্রশাসন ভেঙ্গে দেয়। ভেঙ্গে চলে যাওয়ার পর আবার শুরু হয় ওই ধরণের অসামাজিক কর্মকান্ড। এই ধরণের ভাঙ্গাগড়ার মাধ্যমে চলমান অপকর্ম সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশ অনিশ্চিত করে তুলেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা থেকে সামান্য পশ্চিম দিকে বনের ভেতর চলছে মাইক বাজিয়ে রাতভর অশ্লীল হিন্দি গান, যুবতীদের অর্ধ উলঙ্গ নৃত্য। হাজার হাজার বৈদ্যুতিক বাতির আলোয় বিশাল প্যান্ডেল যে কেউ খুঁজে পেতে দেরী হবে না। প্যান্ডেলের আশপাশে পুলিশ প্রহরাও সবার চোখে পড়বে। সারাদিন মির্জাপুর, ভাওয়াল গড় ও পিরুজালী ইউনিয়নের অলিতে গলিতে রিক্সায় মাইক লাগিয়ে আকর্ষনীয় হাউজি আর প্রিন্সেসদের ঝুমুর ঝুমুর নাচের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্যান্ডেল থেকে মাইকে চলে প্যান্ডেলে চলে আসার আহ্বান। ওয়ান টেন, চরকীসহ নানা রকম লোভনীয় জুয়ার আয়োজন করে হাতিয়ে নেওয়া হয় লক্ষ লক্ষ টাকা।
এলাকাবাসী জানায়, স্কুল-কলেজগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভীড় চোখে পড়ার মত। প্যান্ডেলের আশপাশে গাঁজার ধোঁয়া, সকালে ফেনসিডিলের বোতল পরে থাকে অসংখ্য। প্যান্ডেল এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় পরীক্ষার্থীদের রাতের লেখাপড়ার হয় না বললেই চলে।
মেলার এক আয়োজক মোঃ শাহজাহান বলেন, ”পুলিশ, নেতা-ফেতা, মেম্বার-চেয়ারম্যান, প্রশাসনের স্যাররা ছাড়াও সাংবাদিক ভাইদের দোয়া নিয়েই প্যান্ডেল চালাই”।
আরেক আয়োজক আতাউর রহমান জানালেন, পুলিশকে ২০হাজার, প্রতি সাংবাদকিদের এক হাজার টাকা করে দিয়েই চালাই। আপনার লাগলে বলুন।
এ সকল বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে সংবাদকর্মীরা বিভিন্ন সময় জানিয়েছেন। পুলিশ সুপারকে জিঞ্জাসা করলে তিনি পুলিশ পাঠিয়ে ভেঙ্গে দেন। তবে ভাঙ্গার পর পিছন থেকে আবার শুরু হয়।
জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অবাক হয়ে যান। তিনি কিছ্ইু জানেন না বলে জানান। তবে দিনের বেলায় তদন্ত করতে জেলা প্রশাসনের লোক গিয়ে দেখেন কেউ নেই। রাতের বেলায় উৎসব দিনের বেলায় তদন্ত করার ফলে সত্যতা পাওয়া যায় না। তবে একটি তদন্ত হলে চাঁদার ভাগটি অবশ্য বেড়ে যায়। এই ধরণের তদন্তে যেতে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাও আগ্রহী।
এদিকে এক শ্রেনীর অসাধু ও হলুদ সাংবাদিক প্রতিদিন ওই সকল প্যান্ডেলে যায়। তারা গাজীপুর জেলার সকল সাংবাদিকদের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন বলে জানা গেছে। তারা জেলায় কর্মরত সকল সাংবাদিকদের নামের তালিকা পকেটে রেখে ও তা জমা দিয়ে অবৈধ ব্যবসা করছেন। গাজীপুর প্রেস ক্লাবের কোন কর্মকর্তা এই ধরণের অসৎ কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুর জেলার ৮/৯টি স্থানে প্রতিরাতে একই ধরণের অসামাজিক উৎসব হচ্ছে। জেলা সদরের বোর্ডবাজার, মালেকের বাড়ি, জয়বাংলা রোড, কোনাবাড়ি, কাশিমপুর সহ বিভিন্ন স্থানে চলছে উলঙ্গ নৃত্য। এসকল উৎসব থেকে উপকারভোগীরা অবৈধ অর্থও আদায় করছেন।
সাধারণ মনুষের দাবি, অবিলম্বে এই ধরণের অসামাজিক কর্মকান্ড বন্ধ হওয়া উচিত। অন্যথায় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে সঙ্গ নিয়ে সামাজিক অবক্ষয় রোধে রাজপথে আন্দোলন হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১৫ ঘন্টা, জুন ১৪,২০১৪