সড়ক দূর্ঘটনা একেবারে রোধ করা সম্ভব না হলেও যাত্রী, পরিবহন মালিক এবং সরকারের সমন্বিত উদ্যোগে কমিয়ে আনা সম্ভব বলে উল্লেখ করেছেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘যাত্রী অধিকার মানবাধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘এই জনবহুল দেশে জীবিকার উদ্দেশ্যে প্রতিদিনই কোটি কোটি মানুষ রাস্তায় বের হয়। কিন্তু যাত্রী দূর্ভোগের শেষ নেই। প্রতিদিনই দূর্ঘটনা ঘটছে এবং মানুষ মারা যাচ্ছে।’
প্রতিবছর ১০-১২ হাজার মানুষ সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষগুলো যদি কোন রোগে মারা যেত তাহলে সবার পক্ষ থেকে অন্যরক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতো, বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হতো। কিন্তু দূর্ঘটনায় মারা যাওয়া নিয়ে কারও কোন তোমন মাথাব্যথা নেই। এটা যেন আমাদের গা সওয়া ব্যপারে পরিনত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপদে চলাচলের সঙ্গে অর্থনীতি জড়িত। রাস্তায় বেরিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরে আসাও একটা মানবাধিকার। তাই এর নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যাত্রী সংখ্যা উদ্বেগজনকহারে বৃদ্ধি পেলেও গণপরিবহনের সংখ্যা কমছে। প্রাইভেট পরিবহন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে যানজট বাড়ছে। প্রায় তিন লাখ ফিটনেসবিহীন যানবাহন যাত্রীসেবায় রয়েছে। সড়কপথে দীর্ঘদিনের পুরোনো যানবাহনে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচলে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা।’
তিনি বলেন, ‘নৌ-পথে ধারণক্ষমতার ৪-৬ গুণ বেশি যাত্রী নিয়ে যাতায়াতের কারণে যাত্রীদের যাতায়াত ঝুঁকি বেড়েছে। সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের সূত্রমতে দেশে নিবন্ধিত নৌযানের সংখ্যা ১২ হাজার ৫০০টি। এরমধ্যে যাত্রীবাহী নৌযানের সংখ্যা ২ হাজার ৫০০টি। এছাড়া যাত্রীসেবার পরিবর্তে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, নৌ ঘাটে কুলি ও ইজারাদারদের দৌরাত্ম্যের কারণে যাত্রীরা পদে পদে লাঞ্ছিত হচ্ছেন। মালিক, শ্রমিক সমন্বয়ে সরকারের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে গণপরিবহনের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যাগুলো সমাধান সম্ভব। তাহলেই যাত্রী অধিকারের পাশাপাশি মানবাধিকার সমুন্নত হবে।’
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সাংসদ আবুল কালাম আজাদ, সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এম এ সালাম, অর্থ সম্পাদক এম মনিরুল হক, কেন্দ্রীয় সদস্য ইয়াসমিন আক্তার।