ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সীমান্ত চুক্তি ও তিস্তা নদীর পানি বণ্টনে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বলেছেন, ভারত সবসময়ই তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। শুক্রবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি এই কথা বলেন। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব এহসানুল করিম হেলালের বরাত দিয়ে বাসস এই তথ্য জানিয়েছে।
ছয় দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এখন ভারতে আছেন। শুক্রবার রাতে তিনি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও তাঁর সাক্ষাৎ হয়।
আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নতির ভুয়সী প্রশংসা করে প্রণব মুখার্জি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করছে। বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির হার স্থিতিশীল রয়েছে এবং মাথাপিছু আয় ও রেমিট্যান্স অর্জনের হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বাংলাদেশ থেকে আমদানি বৃদ্ধির কথা জানিয়ে প্রণব মুখার্জি বলেন, আমদানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ আরও বাড়াবে ভারত।
বৈঠককালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাকে এবং প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য প্রণব মুখার্জিকে ধন্যবাদ জানান। আবদুল হামিদ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রণব মুখার্জির উল্লেখযোগ্য ভূমিকার কথা স্মরণ করেন এবং তাকে ধন্যবাদ জানান। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সমর্থন এবং সহযোগিতার জন্য ভারতের জনগণ ও সে দেশের সেনাবাহিনীকেও ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রপতি।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘আকাশবাণী’ থেকে সম্প্রচারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্বলিত একটি বই আবদুল হামিদকে উপহার দেন প্রণব মুখার্জি। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদও মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত একটি বই প্রণব মুখার্জিকে উপহার দেন।
বৈঠক শেষে প্রণব মুখার্জির সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন আবদুল হামিদ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, ভারতের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্যের মধ্যে রাষ্ট্রপতির স্ত্রী রাশিদা খানম, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রেদোয়ান আহমেদ তৌফিক এমপি, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, রাষ্ট্রপতির সিনিয়র সচিব শেখ আলতাফ আলী নৈশভোজে যোগ দেন।