বেরোবি: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে নিজ দপ্তরে আসছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার। একই সাথে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে যাওয়ায় এবং উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের অনুপস্থিতে অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।
কর্মকর্তাদের দাবি মেনে না নেয়ায় এবং তাদের দাবিগুলোর ব্যাপারে কোন আশ্বাস না পাওয়ায় ৪র্থ দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে কর্মকর্তারা। উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আমিনুর রহমানকে অব্যাহতি, ডেপুটি রেজিস্ট্রার গোলাম মোস্তফাকে সংস্থাপন শাখা থেকে অন্য দপ্তরে বদলিসহ ১১ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি করছেন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। বৃহস্পতিবার কর্মবিরতির ৪র্থ দিনে সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা রেজিস্ট্রার দপ্তরের সামনে অবস্থান নেয় তারা।
কর্মর্কতাদের দাবিগুলোহলো- পদোন্নতি কর্মকর্তাদের স্থায়ীকরণ অবিলম্বে সম্পন্ন করা, যেসব কর্মকর্তার পদোন্নতি বোর্ড হয়নি তাদের বোর্ড দ্রুত সম্পন্ন করা, যেসব কর্মকর্তার পদবীবদল করা হয়েছে তাদের স্বপদে ফিরিয়ে আনা, সরকারি নিয়মে পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম প্রস্তুত করা, প্রতিটি দপ্তরকে নিজস্ব কাজ বুঝিয়ে দিয়ে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করা, প্রশাসনিক ভবনে কক্ষ বরাদ্দের নিমিত্তে যে কমিটি গঠিত হয়েছে তাতে জ্যেষ্ঠতার নীতি অবলম্বন করা, ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া বেতন পরিশোধ করা, হয়রানিমূলক বদলীকৃত কর্মকর্তাদের নিজনিজ দফতরে পুনর্বহাল করা, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে স্বতন্ত্রতা ও গোপনীয়তা রক্ষা করা এবং রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অধীনস্থ কর্মকর্তার নজরদারি বন্ধ করা।
এবিষয়ে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের সর্বাত্মক কর্মবিরতির আজ ৪র্থ দিন চলছে। এই চারদিনে রেজিস্ট্রার এবং উপাচার্য মহোদয় আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলোর বিষয়য়ে এখন পর্যন্ত কোন আশ্বাস দেননি এমনকি রেজিস্ট্রার এবং উপাচার্য মহোদয় কর্মবিরতির শুরুরদিন থেকে নিজস্ব দপ্তরে পর্যন্ত আসেননা। এমতাস্থায় আমাদের যৌক্তিক ১১ দফা দাবিবাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে।
এদিকে কর্মচারীদের দাবিগুলোর ব্যাপারে কোন আশ্বাসনা পেয়ে দি¦তীয় দিনের মতো কর্মবিরতি অব্যহত রেখেছে কর্মচারী ইউনিয়ন (৪র্থ শ্রেণি)। ১০ দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে ক্যাম্পাসের শেখ রাসেল চত্বরে কর্মবিরতি করছে তারা।
কর্মচারীদের দাবীগুলোর মধ্যে রয়েছে, আগামী সিন্ডিকেটের আগেকর্মচারীদের নীতিমালা পাশ, চলতি মাসেই ৫৮ জনকর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া পরিশোধ, দ্রুত পেনশন নীতিমালা বাস্তবায়ন, সাময়িক বরখাস্তকৃত কর্মচারীদের চাকরীতে পুনর্বহাল, দূরের কর্মচারীদের জন্য গাড়ি ও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা, কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতিকে লাঞ্চিত করার ঘটনার বিচার করা, কর্মচারী নিয়োগ কমিটিতে কর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধি রাখা ও মাস্টারোল কর্মচারীদের চাকরী স্থায়ীকরা।
কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম বলেন, আমাদের দাবিগুলো নিয়ে এখনো উপাচার্য মহোদয় কোন আশ্বাস দেননি। তাই যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে না নেয়া পযর্ন্ত আমাদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলতেই থাকবে।