ঢাকা:আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে আজ নির্বাচনী ভাগ্য নির্ধারণ হবে বেশ কিছু রাজনৈতিক রথী-মহারথীদের। বিভিন্ন কারণে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার বাছাইয়ে প্রার্থিতা হারানো বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার প্রার্থিতা বৈধ হবে কি না তা জানা যাবে আজ শনিবার।
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) তাদের করা আপিলের ওপর আজ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর পরই জানা যাবে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না। যদিও ইসির শুনানিতে প্রার্থিতা বাতিল হলে তাদের উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
নির্বাচনে অংশ গ্রহণের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। রিটানিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে তিন দিনে ইসিতে মোট ৫৪৩টি আপিল আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিনে মোট ৩১০টি আপিলের শুনানি হয়। বাকি ২৩৩ জনের আবেদনের শুনানি হবে আজ শনিবার।
এক্ষেত্রে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদন নম্বর ৩৮৬ (ফেনী-১), ৪৪১ (বগুড়া-৬) ও ৪৭৯ (বগুড়া-৭)। টাঙ্গাইল-৪ ও ৮ আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর প্রার্থিতা টিকবে কি না তার ওপর শুনানি হবে।
খালেদা জিয়ার মনোনয়নত্র দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার কারণ দেখিয়ে এবং কাদের সিদ্দিকীকে ঋণ খেলাপের কারণ দেখিয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা।
অন্যদিকে, রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও ঢাকা-৮ আসনে প্রার্থিতার বৈধতা চেয়ে মির্জা আব্বাসের করা আবেদনের ওপর শুনানি হবে আজ।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের মনোনয়নপত্র বাতিলের আবেদন করেছেন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির সাব্বির আহম্মেদ। আর মির্জা আব্বাসের মনোনয়নপত্র বাতিলের আবেদন করেছেন ঢাকা-৮ আসনে মহাজোটের প্রার্থী ও ওয়াকার্স পার্টির সভাপিত, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
এ ছাড়া বার বার দল পরিবর্তনকারী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ঢাকা-১৭ আসনে নির্বাচন করতে পারবেন কিনা তাও জানা যাবে আজ। হাইকোর্টের একটি আদেশে তাকে আত্মসমর্পন করতে বলা হয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র বা দলীয় প্রার্থী কোনো কিছুই উল্লেখ না করায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার।
অন্যদিকে ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব আসলাম চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
গত দুই দিনে ১৫৮ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। এর অধিকাংশই বিএনপির প্রার্থী।
ইসির আপীলে বাদ পড়া প্রার্থীরা উচ্চ আদালতে যেতে পারবেন। সেখানে তাদের পক্ষে রায় এলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
গত ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে ২ হাজার ২৭৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ ও ৭৮৬টি অবৈধ বলে ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এগুলোর মধ্যে বিএনপির ১৪১টি, আ’লীগের ৩টি এবং জাতীয় পার্টির ৩৮টি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয় ৩৮৪টি।
দুই দিনে ৩১০টি আপিল আবেদনের শুনানিতে কমপক্ষে ১৫৮ জন তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। শনিবার বাকি ২৩৩টি আপিল শুনানি করে নিষ্পত্তি করবে কমিশন।
৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ ডিসেম্বর।