বিএনপি বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তার তালিকা সিইসির হাতে

Slider রাজনীতি


ঢাকা: নির্বাচন কমিশনে ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে বিএনপি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে যান। তারা বিএনপির পক্ষ থেকে ১৩ দফা লিখিত দাবি জানান কমিশনে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার স্বাক্ষরিত ওই ১৩ দফা দাবির সারসংক্ষেপের মধ্যে রয়েছেÑ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমাদানের জন্য বিএনপি অফিসের সামনে বিশাল গণজমায়েতে পুলিশি হামলা ও গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নির্বিকার ভূমিকা, এক থানা অথবা নির্বাচনী এলাকায় কর্মরত কর্মকর্তাদের অন্য থানা বা নির্বাচনী এলাকায় ভোট গ্রহন কর্মকর্তা হিসাবে পদায়ন, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে তথাকথিত জরিপ প্রতিবেদন সমতল নির্বাচনী মাঠ তৈরিতে প্রতিবন্ধকতা, বঙ্গভবনে সংসদ সদস্য পদ প্রার্থী প্রেসিডেন্ট পুত্রের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সভা এবং আপ্যায়ন, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ও জন নিরাপত্তা বিভাগের সচিবের সঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগের সকল রিটার্নিং অফিসার( জেলা প্রশাসক) ও পুলিশ সুপারদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক, এনটিএমসি ও বিটিআরসির বিতর্কিত কর্তকর্তাদের সরিয়ে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা পদায়ন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সকল দল ও প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য জনপ্রশাসনের দলবাজ ও রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারি কর্মকর্তাদের অবিলম্বে প্রত্যাহার, আসন্ন নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ, সুবিধা সম্পন্ন সমতল নির্বাচনী মাঠ তৈরির স্বার্থে থানা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেয়া, পুলিশ বিভাগের রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারি কর্মকর্তাদের অবিলম্বে প্রত্যাহার, তফসিল ঘোষণার পরও নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে ডকুমেন্টারি মুভি ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিবিধ বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ, সিটি করপোরেসন ও সরকারি মালিকানাধীন ইলেক্ট্রনিক ডিসপ্লে বোর্ড এবং ডিজিটাল বিল বোর্ডে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও এমপিদের ছবি সংবলিত কথিত উন্নয়ন প্রচারণা বন্ধ এবং গণহারে আওয়ামী লীগ পন্থী কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ না দেয়ার দাবি জানানো হয়।

অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত বিস্তারিত বিবরনে ১৩ দফার সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর মির্জা ফখরুল ইসলাম এক চিঠিতে লিখেছেন, সম্প্রতি সারাদেশের প্রত্যেকটি নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের তালিকাভূক্ত প্রতিটি ব্যাক্তির বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তাদের ব্যাক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে আওয়ামী লীগের অনুগত কিনা তা যাচাই বাছাই করছে। যা ইতিপূর্বে বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ ধরণের কাজ নির্বাচনী মাঠ তৈরির স্বার্থে ব্যতায় বিধায় থানা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেয়া থেকে বিরত রাখার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গহণে জোর দাবি জানাচ্ছি। আরেক দফায় বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তাদের তালিকা দিয়ে তাদের সকল প্রকার দায়িত্ব থেকে বিরত থাকার দাবি জানানো হয়।
ওদিকে নির্বাচন ভবন থেকে বেরিয়ে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সাংবাদিকদের বলেন, এখনও নৌকার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তারা।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য সব আয়োজন যেন করে রেখেছে সরকার ও প্রশাসন। তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে ইসির সুস্পষ্ট নির্দেশনা চায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করতে আমরা এর আগেও নির্বাচন কমিশনকে বলেছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আজ বিতর্কিত অর্ধশতাধিক সরকারি কর্মকর্তাকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে ইসিকে অনুরোধ করেছি। আলাল বলেন, আমাদের মনোনয়নপ্রত্যাশীসহ তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রতিদিন গ্রেফতার করা হচ্ছে। গ্রেফতার নেতাকর্মীদের সুনির্দিষ্ট তালিকা আমরা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *