ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার বাড়ছে, তথ্য গোপনের অভিযোগ

Slider জাতীয়

ডেঙ্গু জ্বর যা ব্রেকবোন ফিভার নামেও পরিচিত, এটি সংক্রামক ট্রপিক্যাল ডিজিজ যা ডেঙ্গু ভাইরাস-এর কারণে হয়। একসময় এই রোগ ছিল আতঙ্ক।

ধীরে ধীরে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষের মাঝে আতঙ্ক কমলেও ফের চিন্তা বাড়িয়েছে।
চলতি বছরে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে তার সঠিক কোনো হিসাব সরকারের কাছে নেই। তবে মৃতের সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। সরকারি হিসেব মতে গত ১৫ বছরের মধ্যে ডেঙ্গুতে এবারই সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

রাজধানীর বিলাসবহুল হাসপাতালগুলোতে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে সেসব হাসপাতালে অনেকের মৃত্যু হলেও সে তথ্য গোপন করা হয়েছে। এমনকি অনেক হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হেমোরেজিক বা শক সিন্ড্রোমের রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে না। এদিকে রাজধানীর বাইরেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কয়েকজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা জানিয়েছেন, এ বছর ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপের মধ্যে ডেন- ৩তে আক্রান্ত হচ্ছে বেশির ভাগ মানুষ। এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ। তাছাড়া পরীক্ষা করে দেখা গেছে ডেঙ্গু নিয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা বেশির ভাগই দ্বিতীয়বারের মতো আক্রান্ত হয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গুতে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়াটা যে কোনো রোগীর জন্য ভয়াবহ। কেন না, প্রথমবারের চেয়ে দ্বিতীয়বারের ভয়াবহতা প্রায় ২০০ গুণ বেশি। আক্রান্তের অল্প সময়ের মধ্যে রক্তক্ষরণ দেখা দিতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ:
ডেঙ্গুতে জ্বর আসবে। জ্বর কম হতে পারে, আবার বেশিও হতে পারে। এর সঙ্গে গায়ে ব্যথা হয়। জ্বর তিন-চার দিন পর ভালো হয়ে যেতে পারে। তবে এরপর প্লেটিলেট কম হতে থাকে। হঠাৎ মাঝখানে একটি বিরতি দিয়ে আবার একটি জ্বর আসে।

এছাড়া এই জ্বরের সঙ্গে প্রচণ্ড মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা এবং চোখের পেছনে ব্যথা করবে। শরীর এমন ব্যথা করবে যেন মনে হবে কেউ হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছে। জ্বর সাধারণত দুই দিন থাকার পর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় র‍্যাশ দেখা দেবে।

যদি জ্বর জটিল পর্যায় হয়, তাহলে মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে পারে, রক্তবমি হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে পায়খানার সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। আপার অ্যাবডোমিনে বা ওপরের পেটে পানি চলে আসতে পারে। ’

এই জ্বরে যেহেতু পানিশূন্যতা বেশি হয়, তাই প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যেতে পারে। কিডনি বিকল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ঘাম হতে পারে। বমি বমি ভাব হতে পারে, খাবারে অরুচি হতে পারে। অন্যান্য ভাইরাস জ্বরের যে লক্ষণ, সেগুলো প্রায় সবই ডেঙ্গু জ্বরে থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *