শরীয়তপুরে ভাবি রিতা কির্ত্তনীয়াকে (২৩) পুড়িয়ে হত্যা মামলায় দেবর জীবন কির্ত্তনিয়াকে (৩৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অপর দুই আসামি ঝর্ণা কির্ত্তনীয়া (৩০) ও প্রিয়াংকা কির্ত্তনীয়া (২২) দোষী প্রমাণ না হওয়ায় বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যলের বিচারক সালাম খান এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পিপি অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহাম্মেদ ও আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান (মাসুদ)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার বাঐকান্দি গ্রামের সনাতন কির্ত্তনীয়ার সাথে হিন্দু ধর্ম অনুসারে রিতা কির্ত্তনীয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আসামিদের সাথে রিতার পারিবারিক দন্দ চলে আসছে।
গত ২০১৩ সালের ১৪ মে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে স্বামী সনাতন কির্ত্তনীয়ার ঘরের পাকা সিঁড়িতে বসে রিতা চুল আচড়ানোর সময় তার দেবর জীবন কির্ত্তনিয়া পেছন থেকে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। তখন রিতা জীবন বাঁচাতে পাশের পুকুরে ঝাঁপ দেয়। প্রতিবেশিরা পুকুর থেকে উদ্ধার করে প্রথমে ভেদরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাৎক্ষনিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। একই বছর ২০ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিতা মৃত্যুবরণ করেন।
ঘটনার পর ২০১৩ সালের ১৫ মে নিহতের বড় ভাই নারায়নচন্দ্র মন্ডল (৪৪) বাদী হয়ে ভেদরগঞ্জ থানায় ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৩ সালে তদন্ত সাপেক্ষে জীবন কির্ত্তনিয়া, ঝর্ণা কির্ত্তনীয়া ও প্রিয়াংকা কির্ত্তনীয়া তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পর্যায়ক্রমে আসামি প্রিয়াংকাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। আর বাকি জীবন ও ঝর্ণা দুই আসামি স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হন। পাঁচ বছর শেষে ১০ জনের সাক্ষ্য প্রমাণের পর জীবন কির্ত্তনীয়া দোষী হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালতের বিচারক।