উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আটটি আন্তঃনগর ট্রেনে হিজড়াদের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন যাত্রীরা। এসব হিজড়া প্রতিদিন দল বেঁধে কোনো না কোনো ট্রেনে উঠে চালায় চাঁদাবাজি।
এদের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি আর মারমুখী আচরণে আতঙ্কিত ও বিব্রত যাত্রীরা চাঁদা দিতে বাধ্য হয়।
যাত্রীদের তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত ট্রেনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদাসীনতায় এ ধরনের ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন।
উত্তরাঞ্চলের পার্বতীপুর থেকে ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর রুটে আটটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এগুলো হল- নীলসাগর, একতা, দ্রুতযান, বরেন্দ্র, তিতুমীর, সীমান্ত, রূপসা ও লালমনি এক্সপ্রেস। এর মধ্যে সাতটি আন্তঃনগর ট্রেন সীমান্তবর্তী হিলি স্টেশন হয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে চলাচল করে। ওইসব ট্রেনে প্রতিদিন নাটোরের মারুফা হিজরা, রুমা হিজরা, ঝর্ণা হিজরা, একা হিজরা, পাতা হিজরার নেতৃত্বে সক্রিয় ৫টি দল পার্বতীপুর, রংপুর, নীলফামারী, দিনাজপুর, জয়পুরহাট অঞ্চলের হিজড়ারা দল বেঁধে ট্রেনে উঠে পড়ে। তারপর শুরু করে গণহারে টাকা-পয়সা আদায়।
কেউ টাকা দিতে না চাইলে চাঁদা দাবি করা হিজড়া সম্প্রদায়ের সদস্যরা নানা বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে। এ অবস্থা থেকে বাঁচতে যাত্রীরা তখন চাহিদা মতো টাকা দিয়ে হিজড়াদের বিদায় করতে বাধ্য হয়।
ভুক্তভোগী যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ট্রেনে কর্মরত রেল-পুলিশসহ অন্য কর্মচারীরা যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার চেয়ে বিনা টিকিটের যাত্রী ও চোরাচালানিদের কাছ থেকে ঘুষ নিতে ব্যস্ত থাকেন। তাই হিজড়া সম্প্রদায়ের হাতে যাত্রীদের হয়রানি বন্ধে তারা কোন ভূমিকা রাখতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে সান্তাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) আকবর হোসেন জানান, নাটোর কেন্দ্রীক গড়ে ওঠা হিজড়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। ইতিমধ্যে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি। আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে হকার-ভিক্ষুক ও হিজড়াদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ইতিমধ্যে রেলওয়ে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করা হলে সংশ্লিষ্ট ট্রেনের কর্তব্যরত গার্ড, টিটিই, অ্যাটেনডেন্ট ও দায়িত্বরত রেল পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।