গ্রাম বাংলা ডেস্ক: পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মিত হলে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে না। বরং শুস্ক মৌসুমে হাওরের পানি প্রবাহ বাড়বে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আগারগাঁওস্থ বন অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষ হৈমন্তিতে পরিবেশ অধিদপ্তর, সিইজিআইএস এবং বাংলাদেশ ওয়াটার পার্টনারশিপের যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।
বিভিন্ন সময়ে যে সব বিশেষজ্ঞ টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন মন্ত্রী তাদের ব্যাপারে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ওইসব বিশেষজ্ঞরা না বুঝেই টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করছেন। তিনি বলেন, দ্যাট ইস রং। টিপাইমুখ বাঁধ হলে বরং হাওরে মাছের উৎপাদন বাড়বে।
সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর উজানে বরাক নদীর টিপাইমুখে ভারত টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত সরকার কর্তৃক টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের একতরফা উদ্যোগ বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের পানি প্রবাহের ওপর একচেটিয়া কর্তৃত্ব ভারতের হাতে থাকবে। এই বাঁধ নির্মাণের ফলে ওই এলাকার জলপ্রবাহ, প্রাণবৈচিত্র ও কৃষি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অন্যদিকে ভারতের মনিপুর ও মিজোরামের জনগণও এই বাঁধের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন করছে।
পানি সম্পদ মন্ত্রী তার বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে আরো বলেন, বাংলাদেশে কাপ্তাই ড্যাম নির্মিত হয়েছে। কর্নফুলী নদী শুকিয়ে যায়নি।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা যদি কোনো বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে চুপ করে থাকা উচিত, মন্তব্য করা ঠিক না। তবে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মিত হলে ইকোলজিক্যাল ব্যালান্স ক্ষতিগ্রস্থ হবে জানিয়েছেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশের উৎকণ্ঠার কথাও জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা উদ্বিগ্ন’।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বুড়িগঙ্গায় গেলে কষ্ট হয়। তিনি প্রশ্ন করেন এ নদীর ক্ষতির জন্য করা দায়ী? তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই সরকার কঠোর হবে। তিনি নিজ দেশের নদী, খাল, বিল হত্যার ব্যাপারে সোচ্চার হতে সবাইকে পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, জনগণ সোচ্চার হলে কেউ নদী দখল করে রাখতে পারবে না। জনগণকেই নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে উদ্যোগী হতে হবে।
তিনি বলেন, সংবিধানে আছে জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর আহমেদ।
পরিবেশের ওপর সাগরের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাব শীর্ষক প্রতিপ্রাদ্য বিষয়ের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিইজিআইএসের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশরী মোঃ ওয়াজিউল্লাহ, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা উইংয়ের পরিচালক ড. সুলতান আহমেদ,পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক সেলিম ভূইয়া।
সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রইছউল আলম মন্ডল।