ফেসবুকে একটি গ্রুপে ব্যঙ্গ করে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুরের দিকে আলাওল হল ও আমানত হলে এ ঘটনা ঘটে।
এতে ৮ ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় ৩ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) পাঠানো হয়েছে। বাকি ৫ জনকে চবি মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হলে পাঠিয়ে দেয়া হয় বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু তৈয়ব।
আহতরা হলেন- প্রশাসন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের আজিজুল হক মামুন, আরবি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের জোবায়ের আহমেদ, রাজনীতি বিজ্ঞান ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের সাইমুন ইসলাম, ইতিহাস বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ইমাম। ইতিহাস বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আপন ইসলাম মেঘ, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সাহাদাত হোসেন প্রদীপ, আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের হাবিব ও স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের রিংকু দাশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থীরা ক্লাসের বিভিন্ন বিষয়ে অবগত হওয়ার জন্য একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপ খোলে। সেখানে ছাত্রলীগের এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ব্যঙ্গ করে স্ট্যাটাস দেয়। পরে এ নিয়ে দুই ছাত্রলীগ কর্মীর মধ্য কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে চাকসুর সামনে সিএফসি গ্রুপের কর্মী রিংকু দাশকে বিজয় গ্রুপের কর্মীরা চড়-থাপ্পড় মারে।
এর সূত্র ধরে এ. এফ. রহমান হলে বিজয় গ্রুপের কর্মীদের ওপর চড়াও হয় সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এছাড়া হলের দ্বিতীয় তলার ৩টি কক্ষ ভাঙচুরও করা হয়। এ ঘটনার রেশ ধরে শাহ আমানত হলেও সংঘর্ষ হয়৷ পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ক্যম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও এ ঘটনা চলাকালীন সময়ে শাহ আমানত হলের ৩০৬ নং রুম থেকে দুর্বৃত্তরা ল্যাপটপ ও ক্যামরা লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদালয়ের চাকসুর সামনে থেকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে দুইটি পক্ষ হলে অবস্থান নিয়ে মারধরে লিপ্ত হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
এ বিষয়ে সিএফসি গ্রুপের নেতা ও সাবেক ছাত্রলীগের সহ সভাপতি নাছির উদ্দিন সুমন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে একটি পক্ষ বদ্ধপরিকর। তাই তারা আমাদের কিছু নেতা-কর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে।
অন্যদিকে বিজয় গ্রুপের নেতা ও সাবেক কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, জুনিয়রদের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়ছে। আমরা সিনিয়ররা বসে মীমাংসা করে ফেলবো।
হাটহাজারি সার্কেল এএসপি আব্দুল্লাহ আল মাসুম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা প্রস্তুত।
তিনি আরো বলেন, এ ধরনের ঘটনার সাথে যে বা যারা জড়িত থাকবে অতি শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে।