রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় আমনের ফসল ঘরে তোলার পর উপজেলার কৃষকরা এখন বোরো বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কৃষি অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এলাকার কুমারী বিলের পানি কমে যাওয়ায় কয়েক হাজার বিঘা নিচু জমি জেগে উঠেছে। কৃষকরা ‘কোল্ড ইনজুরি’ থেকে রক্ষা পেতে আগাম বোরা চাষের লক্ষ্য নিয়ে বীজতলা তৈরি করতে শুরু করেছেন। চলতি বোরো মৌসুমে এক হাজার ৩৮৯ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৮৯০ হেক্টর।
গত বছর ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। ফলে এ বছর প্রায় সাড়ে ১২০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ কম হবে। কারণ হিসেবে কৃষি অফিস জানিয়েছে, বরেন্দ্র অঞ্চলের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বোরো চাষ কমিয়ে গম, সরিষা, আলু চাষের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। এ জন্য কৃষকরা কৃষি অফিসের কথামতো বোরো চাষ কমিয়ে গম, আলু, সরিষা চাষ করছেন। ইতোমধ্যে কৃষকরা তাদের সংরক্ষিত বীজ সংগ্রহ করার জন্য বিএডিসির ডিলারদের কাছে ভিড় জমাচ্ছেন। এ নিয়ে তানোর পৌর এলাকার সমাসপুর গ্রামের কৃষক শরিফ উদ্দিন, আমশো গ্রামের মামুন, জাপান, কলমা ইউপির চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না জানান, প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশা না পড়তে আমরা বীজ সংগ্রহ করে বীজতলায় বীজ বোপন করেছি। এবার যেসব জাতের বোরো বীজ সংগ্রহ কারা হয়েছে সেগুলো হল ব্রি ধান ২৮, ব্রি ধান ৪৯, ব্রি ধান ২৬, এবং স্থানীয় জাতের জিরা বীজ উল্লেখযোগ্য। বেশি ফলনের আশায় কৃষকরা এবার এসব বীজ সংগ্রহ করছে।
চান্দুড়িয়া চৌকির ঘাট এলাকায় বীজ বপন অবস্থায় কথা হয় কৃষক যতীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার ১০ বিঘা জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্য নিয়ে ৫০ কেজি জিরা ধানবীজ ও ব্রি-২৮ জাতের বীজ বোপন করছি। গত বছর সাত বিঘা জমিতে এ জাতের ধান রোপন করে বিঘা প্রতি কাচি ৩০ মণ করে ফলন পাওয়ায যায়। ফলে তিন বিঘা বেশি জমিতে চাষ করবেন এবার। এ নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. হাসানুল কবীর কামালী বলেন, চলতি বোরো মৌসুমের জন্য কৃষকরা আমন ধান আগাম হওয়ায় ও শীব নদীর পানি নেমে যাওয়ায় তড়িঘড়ি করে তারা বোরোর বীজতলা তৈরি করে বীজ বপন শুরু করেছেন যাতে ঠাণ্ডা ও কুয়াশার দুর্ভোগ পোহাতে না হয়।