শাকের চেয়ে এখন ঘাসের দাম বেশি ঢাকায়

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি

রাজধানীর প্রায় প্রতিটি বাসাবাড়ির নিচে কোরবানির গরু বাঁধা। পশুর হাট থেকে আনা গরুগুলোর জায়গা হয়েছে বাসাবাড়ির পার্কিংয়ে অথবা প্রধান ফটকের বাইরে। ঈদের এখনও দুই রাত একদিন বাকি। ঢাকার বাড়িতে গরু আসার পরই প্রতিটি এলাকা, পাড়া-মহল্লায় অস্থায়ী দোকানে ভরে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা প্রতিটি এলাকায় গড়ে তুলেছেন গরুর খাবার ভুসি, খড়, ঘাস, ধানের গাছ বিক্রির অস্থায়ী দোকান।

পাশাপাশি গরু জবাইয়ের পর মাংস রাখার চাটাই, কাটার জন্য খাইট্টাসহ নানা উপকরণের অস্থায়ী দোকান নিয়ে বসেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

গরুকে খাওয়ানোর জন্য এসব অস্থায়ী দোকানে রয়েছে ঘাস, ভুসি, খড় ইত্যাদি। তবে তুলনামূলক কম পাওয়া যাচ্ছে ঘাস ও ধানের গাছ। এগুলোর দামও বেশ চড়া। প্রতি আঁটি ঘাস, ধানের গাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। যেখানে ঢাকায় প্রতি আঁটি খাওয়ার শাক বিক্রি হয় ১০ থেকে ৩০ টাকায়। সেখানে গরুর খাবার হিসেবে ঘাস, ধানের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।

রাজধানীর মিরপুর শেওড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোখলেসুর রহমান এবার দুটি গরু কিনেছেন কোরবানির জন্য। শুক্রবার (৮ জুলাই) গাবতলী হাট থেকে গরু দুটি কিনে শেওড়াপাড়ার বাসায় এনেছেন। ঈদের যেহেতু আরও দুই রাত একদিন বাকি তাই গরুকে খাওয়ানোর জন্য মহল্লার অস্থায়ী দোকানে এসে গো খাদ্যের দাম শুনে চোখ কপালে উঠেছে তার। তিনি বলেন, ঢাকার বাজারে মানুষের খাওয়ার জন্য শাক বিক্রি হয় ১০-২০ টাকায়। আর গরুর জন্য ঘাস কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকা আঁটিতে। মানুষের খাবারের চেয়ে গরুর খাবারের দাম বেশি এখন ঢাকায়।

রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় এমনই একটি অস্থায়ী দোকান দিয়েছেন স্থানীয় সবজি বিক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক। গো খাদ্যসহ অন্যান্য উপকরণের দাম নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘাসের দাম বেশি এটা ঠিক, এ কারণে আমরাও কম এনেছি। এছাড়া কারওয়ান বাজার থেকে পাইকারি দামে ধানের কাঁচা গাছ কিনে এনেছেন ব্যবসায়ীরা। গরুকে খাওয়ানোর জন্য আমরা এসব ঘাস এবং ধানের গাছের আঁটি বিক্রি করছি ৫০ টাকা করে। এগুলো তো আর ঢাকায় বেশি পাওয়া যায় না, তাই দাম বেশি। এছাড়া ভুসি প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি করছি। গত বছরও এগুলোর দাম কম ছিল।

রাজধানীর মহাখালী এলাকায় ভ্যানে করে মাংস কাটার জন্য খাইট্টা ও চাটাই বিক্রি করছেন ফরিদ আহমেদ নামের একজন। তিনি বলেন, মিল থেকে গাছ কেটে খাইট্টাগুলো আমরা বানিয়ে নিয়ে এসেছি। আকারভেদে বড়গুলো ৫০০, মাঝারি ৪০০ আর ছোটগুলো ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় আমরা বিক্রি করছি। আর চাটাই ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করছি।

ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায় থাকেন ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেন। রাজধানী আফতাব নগর হাট থেকে বৃহস্পতিবার গরু কিনেছিলেন তিনি। কোরবানির পর মাংস কাটার জন্য পেশাদার কসাই ঠিক করেছেন ইতোমধ্যে। গরুর খাবার আর কোরবানির আনুষঙ্গিক জিনিস কিনতে এলে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতি কোরবানির ঈদে এমন অস্থায়ী ব্যবসায়ীতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় প্রতিটি এলাকা, পাড়া-মহল্লা। এবারও তাই হয়েছে। তবে অন্যবারের তুলনায় এবার দাম বেশি সবকিছুর। সবচেয়ে অবাক হলাম ঘাসের দাম দেখে। প্রতি আঁটি ঘাস বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, পাশাপাশি গরুর খাবার হিসেবে ধানের গাছও ৫০ টাকা আঁটিতে বিক্রি হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *