ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য খুব ভালো নয়। অবিলম্বে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তাঁর (খালেদা জিয়া) সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া জরুরি। কারণ, বিএনপির চেয়ারপারসন সত্যিকার অর্থেই স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েছেন।
আজ শুক্রবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের স্বাস্থ্য খুব ভালো নয়। প্রথম থেকেই আমরা তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে খুব উদ্বিগ্ন। তাঁর সমস্যাগুলো বেশ বেড়ে গেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার এখন হাঁটতেও কষ্ট হয়। তাঁর স্নায়বিক সমস্যাও দেখা দিয়েছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা যেটা দরকার, দুঃখজনকভাবে সেই চিকিৎসা তিনি এখনো পাচ্ছেন না। কারণ, তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁকে এখন পর্যন্ত দেখা করতে দেওয়া হয়নি বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘এটা আমরা বারবার বলেছি, অবিলম্বে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁর দেখা করতে দেওয়াটা জরুরি। কারণ, তিনি সত্যিকার অর্থেই স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েছেন।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যদিও এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ তাঁকে দেখতে এসেছিলেন, কিছু পরীক্ষার কথা তাঁরা বলে গেছেন। কিন্তু আমরা মনে করি, যাঁরা নিয়মিত তাঁর চিকিৎসা করেন, তাঁদের খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া দরকার, অবিলম্বে দেওয়া উচিত।’
তাঁর স্বাস্থ্য কেমন—এমন প্রশ্নে ফখরুল বলেন, ‘এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার, আপনারা বুঝতেই পারেন যে মানুষ বন্দী জীবনে অভ্যস্ত নন, তাঁকে যখন বন্দী করে রাখা হয়, তখন অবশ্যই চেহারায় একটি ছাপ পড়ে। কিন্তু তাঁর মনোবল অত্যন্ত শক্ত। তিনি আমাদের চেয়েও শক্ত মনের মানুষ। তিনি বারবার এ কথা বলেছেন, আমার (খালেদা) জন্য আপনারা ভাববেন না, আমি ভালো আছি এবং এসব ছোটখাটো সমস্যা আমাকে সমস্যায় ফেলবে না।’
কারাগারে খালেদা জিয়ার থাকার পরিবেশ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাঁর জন্য যেটা করা দরকার, সেটা হচ্ছে না, করছে না। কিন্তু ন্যূনতম যেটা করা দরকার, সেটা করছে।’
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো পুরোনো হয়ে গেছে। এগুলো নিয়ে আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, সরকারি চিকিৎসকেরা তাঁকে দেখেছেন। ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা যাতে চিকিৎসা করতে পারেন, তার জন্য আমরা চিঠি দিয়ে রেখেছি। আমি আবারও বলব, ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া উচিত এবং সে ব্যবস্থা করা উচিত।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম একাই খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তাঁর সঙ্গে দলের অন্য নেতারা কেউ ছিলেন না। ফখরুল বিকেল পৌনে চারটার দিকে কারাগারে যান। বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে পৌনে ছয়টার দিকে কথা বলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কোনো বার্তা দিয়েছেন কি না—এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে যে সংকট বিরাজ করছে, সেই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য তিনি মনে করেন, একমাত্র গণতন্ত্রেই সে সংকট থেকে উত্তরণ করা সম্ভব এবং সে জন্য যে চলমান আন্দোলন আছে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সে আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেছেন এবং আন্দোলনই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার একমাত্র পথ। একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, সরকারের উচিত হবে এ বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’