রোহিঙ্গারা আগের মতোই নৃশংসতার ঝুঁকিতে : ইউরোপীয় পার্লামেন্ট

Slider বিচিত্র

294689_126

 

 

 

 

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ঝিমিয়ে পড়েছে উল্লেখ করে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট (ইপি) বলেছে, রোহিঙ্গারা আবারো অতীতের মতো নৃশংসতার শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও মর্যাদার সাথে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে আস্থা রাখা যায় না।

গত ১২ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর শেষে ব্রাসেলস থেকে দেয়া বিবৃতিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক সাব-কমিটির প্রধান পিয়ার অ্যান্তোনিও এ কথা বলেন। ১১ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে অ্যান্তোনিও ছাড়াও পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির উরমাস পেইট, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক ডেলিগেশনের মার্স তারাবিলা ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ডেলিগেশন প্রধান জেইন ল্যাম্বার্ড ছিলেন। প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজার সফর করে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করেছে। এরপর তারা মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) মিয়ানমারের সাথে সম্পর্ক অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করতে হবে। এতে মিয়ানমারকে শর্ত সাপেক্ষে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে উৎসাহিত ও অনুৎসাহিত করার নীতি অনুসরণ করা প্রয়োজন।

ইপি প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে গত ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সই হওয়া চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির কার্যকর পর্যবেক্ষণ, রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকার কর্মীদের বিনা বাধায় প্রবেশাধিকার ও গত আগস্ট থেকে এ রাজ্যে চালানো ভয়াবহ নৃশংসতার জন্য একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত চালানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

মিয়ানমার জেনারেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ
রাখাইন রাজ্যে নৃশংস অভিযান চালানোর নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগে মেজর জেনারেল মং মং সোয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কানাডা। এর ফলে কানাডায় এই সামরিক কর্মকর্তার কোনো সম্পত্তি থাকলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। একই সাথে কানাডায় এই অফিসারের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রও মেজর জেনারেল মং মং সোয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। গত আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ চালানোর জন্য সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাকে অভিযুক্ত করেছে। ইইউও মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বকে ইউরোপে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাখাইন রাজ্যের দায়িত্ব থেকে মেজর জেনারেল মং মং সোয়েকে সরিয়ে নিয়েছে মিয়ানমার সরকার।

এ ব্যাপারে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড সিবিসি নিউজকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন অভিযান চালানো হয়েছে। এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। আমরা মনে করি জাতিগত নিধন চালানোর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা জরুরি। রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘনের সাথে মেজর জেনারেল মং মং সোয়ে সরাসরি জড়িত ছিল বলে আমরা বিশ্বাস করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *