সাবান কী? আমরা সকলেই জানি যে সাবান হচ্ছে এই পদার্থ, যেটা আমাদের শরীর পরিষ্কার রাখে। অর্থাৎ ত্বকের উপরিভাগে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে। কিন্তু আজকাল যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই সাবানের বিজ্ঞাপন। পত্রিকার পাতা হোক বা টেলিভিশন, সবখানেই এক দাবী যে সাবান ত্বক সুন্দর করে কিংবা আপনার চেহারা ভালো করে বা রঙ ফর্সা করে। আসলেই কি তাই? সাবান কি সত্যিই পারে ত্বক সুন্দর করতে বা চেহারা ভালো করতে?
সাবান প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন ফোনিশিয়ানরা। যিশু খ্রিস্টের জন্মের প্রায় ২০০ বছর আগে সাবানের আকার-আকৃতি বা রঙ আজকের মতো ছিল না। কিন্তু মূল উপাদানে খুব বেশি তফাৎ নেই, তফাৎ নেই কার্যকারিতাতেও। আগে যেমন সাবান ব্যবহার করা হতো শরীর পরিষ্কার রাখতে, এখনো তাই। কেবল সাবান এখন দেখতে সুন্দর হয়েছে, যোগ হয়েছে সুগন্ধী আর ভারী ভারী উপাদানের নাম ব্যবহার করে দাবী করা হচ্ছে যে সাবান ত্বক সুন্দর করে।
কিন্তু মূল সত্যি কথাটা হচ্ছে, সাবান কখনো আপনার ত্বক বা চেহারা সুন্দর করে তুলতে পারে না। সাবানের কাজ ত্বক পরিষ্কার করা, এবং সে কেবল সেটাই করে। তবে খুব যে মোলায়েম ভাবে বা যত্ন করে করে, তাও কিন্তু নয়। সাবানে থাকে মূলত ক্ষার জাতীয় উপাদান, যা ত্বকের ওপরে জমে থাকা তেল ও ময়লা দূর করে, ফলে ত্বক দেখায় পরিষ্কার ও সুন্দর। তবে এই ময়লা পরিষ্কার করতে গিয়ে সাবান বরং উল্টো আপনার ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় তেলও সরিয়ে ফেলে। ফলে আপনার ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক, খসখসে এবং সম্ভাবনা বাড়ে অকালেই বলিরেখা পড়ার। এছাড়া সাবানে থাকে কৃত্রিম রঙ ও সুগন্ধী, যা দেয়া হয় আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য। অথচ এই উপাদানগুলোও আপনার ত্বকের জন্য দারুণ ক্ষতির।
ত্বক পরিষ্কার থাকলে এমনিতেই চেহারা সুন্দর থাকবে ও ত্বকেও ব্রণ বা অন্যান্য ঝামেলা কম হবে। তবে এই পরিষ্কার যে আপনাকে সাবান দিয়েই করতে হবে, তেমন কিন্তু নয়। সুন্দর ত্বক চাইলে আপনি বরং ত্বক পরিষ্কার করতে পারেন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে। মসুর ডাল বাটা, বেসন, ডিমের সাদা অংশ, চালের গুঁড়ো, কমলার খোসা, মধু, কফি, চিনি, লেবুর রস, টমেটো ইত্যাদি অসংখ্য উপাদান দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন আপনার ত্বক। প্রাকৃতিক এইসব উপাদানের ব্যবহারে ত্বক তো পরিষ্কার থাকবেই, সাথে হয়ে উঠবে সুন্দর ও আকর্ষিণীয়।