‘পরিবেশবান্ধব সৎকার’ এর পথে হাঁটছে উন্নত বিশ্ব

Slider সারাবিশ্ব

122622sotkar

 

 

 

 

কবর বা দাহ নয়, মৃতদেহ সৎকারের এক নতুন পদ্ধতি চালু করেছে আমেরিকা ও কানাডা। মৃতদেহ ‘গলিয়ে ফেলার’ এ পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে ‘অ্যালকালাইন হাইড্রোলাইসিস’। যার মূল কথা হলো একটি ক্ষারজাতীয় তরলের মধ্যে মৃতদেহটি দ্রবীভূত করে ফেলা। কিছুদিনের মধ্যেই মৃতদেহ সৎকারের এ পদ্ধতি ব্রিটেনে চালু করা হবে। খবর বিবিসির।

মানুষের মৃত্যুর পর ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী মৃতদেহটিকে কবর দেওয়া হয় বা দাহ করা হয়। বহু প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন সভ্যতায় এটাই চলে আসছে। কিন্তু আমেরিকা এবং কানাডায় নতুন এক বিকল্প চালু করেছে। অনেকে একে বলছেন, পরিবেশবান্ধব সৎকার বা ‘গ্রিন ক্রিমেশন’ যাতে কবরের জন্য জায়গা খরচ হবে না, মৃতদেহ পোড়ানোর জন্য কাঠ, আগুন বা ধোঁয়া বা বিদ্যুৎ খরচের ঝামেলাও থাকবে না।

এতে একটি শক্তিশালী ক্ষারজাতীয় দ্রবণের মধ্যে মৃতদেহটি ডুবিয়ে দেওয়া হয়- যাতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত মাংসপেশী গলে গিয়ে একটা স্বচ্ছ বাদামি তরল পদার্থে পরিণত হয়ে যায়। এ রকম ১৪টি সৎকার কেন্দ্র এখন বিভিন্ন দেশে চালু রয়েছে।

এসব কেন্দ্রের কর্মকর্তারা বলছেন, যারা কবর দিতে চান না, তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই এখন এটা পছন্দ করছেন- যা তাদের বেশ অবাক করেছে।

অ্যালকালাইন হাইড্রোলাইসিস মেশিনটি তৈরি করেছে রেসোমেশন নামে একটি ব্রিটিশ কম্পানি। তারা বার্মিংহ্যাম শহরের কাছে এ রকমই একটি মেশিন বসাতে যাচ্ছে এ বছরেরই শেষ নাগাদ।

মূল যন্ত্রটি হচ্ছে ৬ ফুট উঁচু, ৪ ফুট চওড়া এবং ১০ ফুট গভীর। সামনের দিকে একটি গোল দরজা অনেকটা ব্যাংকের ভল্ট বা সাবমেরিনের দরজার মতো।

একটি ট্রে-তে শুইয়ে মৃতদেহটি মেশিনের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, এবং দরজা বন্ধ করে দেওয়ার পর তা উচ্চতাপে একটি শক্তিশালী হাইড্রক্সাইড দ্রবণে ডুবিয়ে দেওয়া হয়।

আমেরিকার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের স্টিলওয়াটারের এমনি একটি সৎকারকেন্দ্রের কর্মকর্তা জেসন ব্রাডশ বলছেন, একটা কবরে মৃতদেহ যেভাবে প্রাকৃতিকভাবে পচেগলে মাটির সাথে মিশে যায়, এই মেশিনের ভেতরে ঠিক সেই প্রক্রিয়াটাই ঘটে- কিন্তু তা ঘটে কৃত্রিমভাবে এবং অনেক দ্রুতগতিতে।

ব্রাডশ আরও বলেন, একটি মৃতদেহের হাড় ছাড়া পুরো শরীরটা তরলে পরিণত হতে সময় লাগে মাত্র ৯০ মিনিট থেকে চার ঘণ্টা। এর পর দরজা খুলে হাড়গুলো সংগ্রহ করা হয় এবং তা আরেকটি যন্ত্রের সাহায্যে ময়দার মতো চূর্ণে পরিণত করা হয়।

ডাচ গবেষক এলিজাবেথ কিতজার বলছেন, পরিবেশগত প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করে দেখা গেছে কবর বা দাহের তুলনায় এর প্রতিক্রিয়া অনেক অনেক কম। খরচের দিক থেকেও অ্যালকালাইন হাইড্রোলাইসিসের খরচ- কবর বা দাহের তুলনায়- অতি সামান্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *