এই প্রথম অভিশংসনের মুখে নেপালের প্রধান বিচারপতি

Slider বাংলার আদালত

63794_Nepal

 

ঢাকা; অভিশংসনের মুখে পড়ছেন নেপালের প্রথম  ও নারী প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি। নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অনধিকার প্রবেশ, বিচার বিভাগের ভিতর গ্রুপিংয়ের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে নেপালের পার্রামেন্টে রোববার অভিশংসন প্রস্তাব আনা হয়। তাতে ক্ষমতাসীন বড় দুটি দল নেপালি কংগ্রেস (এনসি) ও সিপিএন (মধ্যপন্থি মাওবাদী) দলের ২৪৯ জন সদস্য এ প্রস্তাবটি পার্লামেন্টে তুলেছেন। এর ফলে অভিশংসিত হতে যাচ্ছেন সুশীলা। তবে এ প্রক্রিয়া অনেকটা দীর্ঘ। তাই যদি নিকট ভবিষ্যতে এ প্রস্তাব প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর পার্লামেন্টে ভোট হওয়ার আগেই তিনি অবসরে চলে যাচেন। তবে তার এ সিদ্ধান্তে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছেÑ এটা কি নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে বিচার বিভাগের সাংঘর্ষিক অবস্থা কিনা। এ খবর দিয়েছে নেপালের কাঠমান্ডু পোস্ট। এতে বলা হয়েছে, এটাই নেপালে প্রথম কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিশংসনের সিদ্ধান্ত। বর্তমানে বিচারপতি সুশীলাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।  তার বিরুদ্ধে এমন পদক্সেপ নেয়ার কারণে এনসি ও মাওবাদীদের হজম করতে হচ্ছে তীব্র সমালোচনা। অনেকেই বলছেন, বিচারপতি সুশীলার বিরুদ্ধে যে অভিশংসন প্রস্তাব আনা হয়েছে এর পিছনে স্থির কোনো কারণ নেই। এটা শুধুই প্রতিশোধ গ্রহণ। তবে ক্ষমতাসীন দলগুলো দোষ চাপাচ্ছে সুশীলার ওপরই। তারা বলছে, তিনি ক্ষমতা পৃথকীকরণ নীতির বিরুদ্ধে কাজ করছেন। যারা অভিশংসন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাচ্ছেন তাদের দাবি, এর ফলে মৌলিক নীতি ভেঙে পড়তে পারে, যা হচ্ছে গণতন্ত্রের রক্ষাকবজ। সাবেক প্রধান বিচারপতি কল্যাণ শ্রেষ্ঠা বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলগুলো স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর আক্রমণ করেছে। তারা অভিশংসন প্রস্তাবের পক্ষে যেসব কারণ দেখিয়েছে তা হালে পানি পায় না। গণতন্ত্রে সংসদ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগকে সুষ্ঠু ও স্বাধীনভাকে কাজ করতে দিতে হবে। এক পক্ষের গৃহীত সিদ্ধান্তে অন্যরা খুশি না-ও হতে পারেন। তবু তাদেরকে ওই সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। ক্ষমতাসীন দলগুলোর গৃহীত এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন এমন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের পুরো প্রক্রিয়া ভেঙে পড়বে অভিশংসনের এ সিদ্ধান্তে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছেন, দেশ যখন সংবিধানকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার লড়াই করছে তখন এ প্রক্রিয়ার ফলে পুরো সিস্টেম ভেঙে পড়তে পারে। নেপালের পার্লামেন্টে সদস্য সংখ্যা ৫৯৩। প্রধান বিচারপতিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়তে হবে ৩৯৬ জনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *