এশিয়া কাপ রয়েছে সামনেই। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ের পর্দা উঠবে ৩০ আগস্ট। এর পরই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ভারতের মাটিতে ক্রিকেটের মহাযজ্ঞ শুরু হবে ৫ অক্টোবর। বাংলাদেশের জন্য এ দুটি টুর্নামেন্টই খুব গুরুত্বপূর্ণ। এবারের এশিয়া কাপ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভালো করার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে টাইগারদের। তবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টকে ভাবিয়ে চলেছে তামিম ইকবালের চোট। পুরনো পিঠের ইনজুরিতে জেরবার ওয়ানডে অধিনায়ক। চোট থেকে সুস্থ হয়ে উঠতে লন্ডনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়েছে তাকে। ব্যথা কমাতে ইনজেকশন নিয়েছেন তামিম। লন্ডন থেকে গতকাল ঢাকায় ফিরেছেন তিনি। তবে চোটের যে ধরন তাতে শুধু এশিয়া কাপ নয়, ২০২৩ বিশ্বকাপেও অনিশ্চিত তামিম! ইনজেকশন নিলেও ব্যথা যে কোনো সময় ফিরে আসতে পারে। আর অস্ত্রোপচার করানো হলে ৩-৪ মাসের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে যেতে হবে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ককে।
তামিমের পুরনো পিঠের চোট ফিরে এসেছে আফগানিস্তান সিরিজ থেকে। কোমরের ব্যথার কারণে একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি খেলা হয়নি তার। ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে দলে ফিরলেও অনুশীলনে খুব একটা স্বস্তিতে ছিলেন না তিনি। এমনকি পুরোপুরি ফিট না হয়েই আফগানিস্তান সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছিলেন তামিম। এর পর তো অবসরই নিয়ে নেন। যদিও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবসর ভেঙে ফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার ঘোষণা দেন তামিম। তবে আফগানিস্তান সিরিজের বাকি দুটি ওয়ানডে ম্যাচ তিনি খেলেননি। দেড় মাসের ছুটিতে থাকা তামিমের এশিয়া কাপ দিয়ে দলে ফেরার কথা রয়েছে।
এশিয়া কাপ সামনে রেখে ৩২ ক্রিকেটারকে নিয়ে গতকাল থেকে বাংলাদেশের বিশেষ ক্যাম্প শুরু হয়েছে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ২০-২২ জনের চূড়ান্ত দল ঘোষণা করবে বিসিবি। তামিমের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় এখন নির্বাচকরা। আজ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস ও বিসিবির মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে ওয়ানডে অধিনায়কের।
লন্ডনে মেরুদণ্ড বিশেষজ্ঞ টনি হ্যামন্ডের কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন তামিম। তার সমস্যা মেরুদণ্ডের কোমরের দিকের অংশে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই অংশটিকে বলা হয়, এল-ফোর ও এল-ফাইভ। লন্ডনে দুই দফা ব্যথানাশক ইনজেকশন নিয়েছেন তামিম। আগামী এক সপ্তাহ পুরোপুরি বিশ্রামে থাকবেন তিনি। এরপর ফিটনেস ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করবেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১২-১৪ দিন পর অনুশীলন শুরু করতে পারবেন তামিম। তবে কোমরে যদি ব্যথা অনুভব করেন তা হলে অনুশীলন বন্ধ করে দিতে হবে তাকে।
ওয়ানডে অধিনায়ক হওয়ায় তামিমকে নিয়ে বেশি ভাবতে হচ্ছে নির্বাচকদের। তার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে চূড়ান্ত দলে তাকে রাখা হবে কিনা। এমনকি তামিম না খেললে অধিনায়ক কাকে করা হবে তা নিয়েও ভাবতে হবে। নির্বাচকরা এ জন্য দল ঘোষণা করতে চেয়েও করছেন না! ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির ধারণা, আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে তামিমের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারবেন তারা।
এদিকে গতকাল বিশেষ ক্যাম্পে ২০ জন ক্রিকেটার উপস্থিত ছিলেন। সাকিব, তাওহীদ হৃদয়, শরিফুলদের অনেকেই বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ব্যস্ত আছেন। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক শাহরিয়ার নাফীস জানান, আগামী ৩ আগস্ট ক্রিকেটারদের ফিটনেস টেস্ট দেওয়ার কথা রয়েছে। এরপর ৮ আগস্ট থেকে শুরু হবে এশিয়া কাপের স্কিল ক্যাম্প। তিনি বলেন, ‘আজ (গতকাল) মূলত মেডিক্যাল টেস্ট (রক্ত, চোখের পরীক্ষা ও ইসিজি) করানো হচ্ছে। আগামীকাল (আজ) এবং পরশু (কাল) দল করে ফিজিও স্ক্রিনিং, যেমন হাড় আর পেশির কী অবস্থা, এসব করা হবে।’