২৯০ এমপির শপথ বৈধ: আপিল বিভাগ

Slider বাংলার আদালত

একাদশ জাতীয় সংসদের ২৯০ এমপির শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আদালত বলেছেন, বর্তমান সংসদের ২৯০ এমপির শপথ বৈধ ছিল।

আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার এ এম মাহাবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর ২৯০ সংসদ সদস্যদের শপথকে অবৈধ দাবি ও তাদের পদে থাকার বৈধতা নিয়ে করা রিট ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে খারিজ করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে একই বছরের সেপ্টেম্বরে আবেদন করা হয়েছিল।

আবেদনটি গত বছরের ১১ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানিতে ওঠে। ওই আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নিজেই। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সেদিন মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, তারা রিট শুনানির তারিখ নির্ধারণের জন্য আবেদনটি উপস্থাপন করেছিলেন। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল সময় চাওয়ায় পরের দিন ওই বছরের ১২ জুন আবেদনটি আবার কার্যতালিকায় ওঠে।

২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের ২৯০ সংসদ সদস্য শপথ নেন। এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। নির্বাচিত ব্যক্তিরা সে বছরের ৯ জানুয়ারি শপথ নেন। একই বছরের ২৯ জানুয়ারি ওই সংসদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে, সংসদের মেয়াদ গণনা হবে সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে পাঁচ বছর। তাই দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হয়নি। দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে শপথ নেওয়া হয়েছে। এমন যুক্তিতে একাদশ সংসদের ২৯০ সদস্যের নেওয়া শপথের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ।

রিটে এমপিদের শপথ বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করতে হাইকোর্টের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে ওই রিট আবেদনে বলা হয়, দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই একাদশ সংসদের নবনির্বাচিত সদস্যরা শপথ নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।

ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নেওয়া শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করেছিলেন হাইকোর্ট। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন।

হাইকোর্টের রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষ বলেছিলেন, ৩ জানুয়ারি সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশন বসার দিন থেকে সংসদ সদস্যরা কার্যভার গ্রহণ করে থাকেন। ফলে আগে শপথ নিলেও তাতে সংবিধান বা আইনের ব্যত্যয় ঘটেনি। ফলে রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।

এরপর আবেদনকারী ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন। রিট খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে করা লিভ-টু আপিল শুনানিও এখন শেষ হলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *