অন্তরঙ্গ সম্পর্কের গোপন কথা ‘মাইকেলকে ছাড়া জীবন কল্পনাই করতে পারি না’

Slider টপ নিউজ সারাবিশ্ব

 

26663_int
পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসন ও হলিউড কিংবদন্তি এলিজাবেথ টেলরের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক নিয়ে অনেক কথা। অনেকে অনেকভাবে দেখেছেন সে সম্পর্ক। মাইকেল জ্যাকসনের মা ক্যাথেরিন তো একবার বলেই বসেছিলেন, এলিজাবেথ টেলর আমার ছেলেকে চুরি করেছেন। তারা দু’জন প্রেমিক-প্রেমিকার মতো একে অন্যের সঙ্গে থেকেছেন ছায়ার মতো। কখনো তারা দম্পতির মতো। কখনো বন্ধুর মতো। উজার করে মাইকেল উপহার দিয়েছেন এলিজাবেথকে। বিনিময়ও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু কেন? এ প্রশ্নের পরিষ্কার উত্তর পাওয়া কঠিন। প্রয়াত এ দু’তারকার ওপর এর কিছুটা উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছেন ডোনাল্ড বোগলে। তিনি লিখেছেন ‘এলিজাবেথ অ্যান্ড মাইকেল: দ্য কুইন অব হলিউড অ্যান্ড দ্য কিং অব পপ এ লাভ স্টোরি’। এ বইটি আগামী ৩০শে আগস্ট প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে। এতে বোগলে লিখেছেন, তারা দু’জন একে অন্যকে প্রতিদিনই ফোন করতেন। তাদের ফোনালাপে উঠে আসতো সব প্রসঙ্গ। ম্যাজিকের মতো ঘটনা ঘটে যায় তখন। মাইকেল ও এলিজাবেথ এর ফলে একে অন্যেল সঙ্গে আঁঠার মতো লেগে যান। তাদের প্রথমদিকের সাক্ষাতের একদিন মাইকেলকে চা চক্রে আমন্ত্রণ জানান লিজ টেলর। পরে এ সম্পর্কে লিজ টেলর বলেছিলেন, আমরা একজন অন্যজনের সঙ্গে অধিক থেকে অধিক পরিমাণ সময় কাটাতে থাকি। আমরা বাস্তবেই ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছিলাম। দু’জনেই একে অন্যকে গোপন সব কথা বলে দিতাম তখন। মাইকেলকে হলিউডের একটি লোভ লাগিয়ে দিয়েছিলেন লিজ টেলর। এ সম্পর্কে মাইকেল পরে বলেছেন, আমি তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।
মাইকেল জ্যাকসন ১৯৮৬ সালে পেপসি’র একটি বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন করতে গিয়ে পুড়ে যান। তা নিয়ে তার বেদনার শেষ ছিল না। এ সময় তার ত্বকে ভিটিলিগো নামের একটি সমস্যা দেখা দেয়। এতে তার ত্বক সাদা হয়ে যেতে থাকে। অন্যদিকে এলিজাবেথ টেলরের পশ্চাৎদেশে ও নিতম্বে বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যাথা শুরু হয়। বোগলে লিখেছেন, এ সময় লিজ টেলরের কাছে মাইকেল জ্যাকসন হয়ে ওঠেন সব কিছু। এলিজাবেথ টেলর এ সময় মনে করতে থাকেন তাদের মাঝে গোপন বলতে কিছু ছিল না। তিনি মনে করেন তিনি মাইকেলকে সাহায্য করতে পারবেন। তাই তাদেরকে এক সঙ্গে দেখা যায় লিজা মিনেলি কনসার্টে, ব্রুস স্প্রিংস্টিন ও লস অ্যানজেলেস ব্যালেতে এক সঙ্গে। তারা বিকালটা অতিবাহিত করেন ওয়াল্ট ডিজনির ছবি দেখে। নেভারল্যান্ডে গিয়ে থিম পার্কে ঘুরতেন। খেলা করতেন পশুদের সঙ্গে। ১৯৯৭ সালে এলিজাবেথ টেলরকে উৎসর্গ করে একটি গান লেখেন মাইকেল। সেটি তিনি এলিজাবেথের ৬৫তম জন্মদিনে গেয়ে শোনান। গানটি হলো ‘এলিজাবেথ, আই লাভ ইউ’। এক সাক্ষাতকারে এলিজাবেথ টেলর তাদের সম্পর্কেকে আখ্যায়িত করেছিলেন এভাবেÑ আমি এ যাবত যত ভালবাসা পেয়েছি তার মধ্যে মাইকেলের ভালবাসা সবচেয়ে খাঁটি। আমরা একে অন্যকে কতটা ভালবাসি তা অন্য কেউ জানে বলে আমার মনে হয় না। ১৯৯৩ ও ২০০৫ সালে যখন শিশু নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে মাইকেলের বিরুদ্ধে তখন তার জোরালো পক্ষ অবলম্বন করেন লিজ টেলর। মাইকেলকে শিশু নির্যাতনের জন্য ২০০৩ সালে সিঙ্গাপুরে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাকে সহায়তা করতে প্রথমবারের মতো সিঙ্গাপুরে উড়ে যান এলিজাবেথ টেলর। তিনি সেখানে গিয়ে মাইকেলের পক্ষে দাঁড়ান। এ সম্পর্কে টেলর বলেন, আমি বিশ্বাস করি মাইকেল নিতান্তই নিরপরাধ। তাকে পরিস্থিতির শিকার করা হয়েছে।
তিনি এক সময় বলেছেন, তারা দু’জনে অনেক রাত কাটিয়েছেন একসঙ্গে নেভারল্যান্ডে। এ সময়ে অস্বাভাবিক কিছু ঘটে নি। আমরা শিশুদের মতো হেসেছি। প্রচুর ওয়াল্ড ডিজনির ছবি দেখেছি। এক্ষেত্রেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।
২০০৯ সালে মারা যান মাইকেল জ্যাকসন। এ মৃত্যু যেন বিধ্বস্ত করে ফেলে লিজ টেলরকে। আবারও তার শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তিনি টুইটারে লিখেছেন, আমার হৃদয়, আমার মন ভেঙে গেছে। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছি। কিন্তু এখনও মাইকেলের জন্য আমার হৃদয় পুড়ছে। আমার হৃদয়, মন দিয়ে আমি মাইকেলকে ভালবাসি। তাকে ছাড়া আমার জীবন কল্পনাই করতে পারি না। আমাদের মধ্যে রয়েছে অভিন্নতা। আমরা এক সঙ্গে কত্ত মজাই না করেছি।
মৃত্যুও এ দু’ মহাতারকাকে একত্রিত করেছে। মাইকেলকে ২০০৯ সালে সমাহিত করার দু’বছর পর মারা যান এলিজাবেথ টেলর। তাকেও সমাহিত করা হয় ক্যালিফোর্নিয়ার গ্লেনডালেতে ফরেস্ট লন সেমেটারিতে। এখানেই সমাহিত করা হয়েছে মাইকেলকে। জীবদ্দশায় মাইকেল বলেছিলেন, এলিজাবেথ টেলর একজন মায়ের মতো। হয়তো তার চেয়েও বেশি কিছু। তিনি একজন বন্ধু। তিনি মাদার তেরেসা, প্রিন্সেস ডায়ানা, ওয়েন্ডি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *