তিস্তার ঘোলা পানির ঘূর্ণিতে ভেসে আসছে একের পর এক লাশ!

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং দক্ষিণ লোনাক লেক উপচে বিপুল পানির স্রোতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের সিকিম রাজ্য। বুধবার গোটা দিনজুড়ে সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তিস্তা। নদীর ঘোলা পানির ঘূর্ণিতে এবার ভেসে আসছে একের পর এক লাশ। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সচিবালয় নবান্ন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১৮ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনের লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তাদের মধ্যে সেনাবাহিনীর চার জওয়ান আর বাকি দু’জন সাধারণ মানুষ।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি জেলা থেকে মোট ১৫ জনের লাশ মিলেছে। ময়নাগুড়ি ব্লকে থেকে আটটি লাশ, জলপাইগুড়ি সদর ব্লক থেকে তিনটি, মালবাজার এবং ক্রান্তি ব্লক থেকে দু’টি করে লাশ উদ্ধার হয়েছে। সকলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মোট ১৫টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।’ কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে তিস্তা থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’টি লাশ।

বুধবারই নবান্ন জানিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গের অন্তত দু’হাজার পর্যটক সিকিমে আটকে পড়েছেন। যোগাযোগ করতে না পেরে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল তাদের পরিবার। নবান্ন জানিয়েছে, আটকে পড়া পর্যটকদের অনেকেই এবার ফিরে আসতে শুরু করেছেন। তবে এখনো পশ্চিমবঙ্গের অন্তত ৪৫০ জন পর্যটক লাচেন ও উত্তর সিকিমের প্রত্যন্ত এলাকায় আটকে রয়েছেন। ওই সব এলাকা এখনো বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাও অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জলপাইগুড়িতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দু’টি দল মোতায়েন করা হয়েছে। অন্য দিকে, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও মোতায়েন তিন জেলায়— জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, কোচবিহার।

নবান্ন জানিয়েছে, ডিভিসি পানি ছাড়ার পরিমাণ কমানোয় দক্ষিণবঙ্গেও বন্যা পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হয়েছে। হাওড়া-হুগলির নদীগুলির পানিস্তরও নামতে শুরু করেছে। তবে দক্ষিণবঙ্গে বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পুরুলিয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সব ক’টি জেলায় সব মিলিয়ে ১৬৬টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *