থার্টিফার্স্ট ঘিরে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা

Slider সারাদেশ

ইংরেজি নতুন বছর বরণকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানের লোকজন কক্সবাজারে ২০২১ সালের শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় ও রাতে বিভিন্ন হোটেলের ইনডোরে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে এবং বিশাল সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়িয়ে ইংরেজি নতুন বছর ২০২২ সালকে রবণ করতে কক্সবাজারে ছুটে আসছেন। শীতের হিমেল হাওয়া ও শিশিরভেজা বালিয়াড়ি পর্যটকদের পদচারণায় মেতে উঠবে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ জানায়, কক্সবাজারে সাড়ে ৪০০ আবাসিক হোটেলে প্রায় দেড় লাখ লোক রাত যাপন করতে পারেন। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি হোটেলে সিসিটিভি ক্যামেরা নিশ্চিত করা হয়েছে। শৃঙ্খলা রক্ষায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাদা পোশাকধারী পুলিশ সব সময় মাঠে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। কক্সবাজারে ৩৫টি পর্যটন জোন রয়েছে। প্রত্যেক জোনে ট্যুরিস্ট পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। ট্যুরিস্ট পুলিশের চট্টগ্রামের ডিআইজি মো. মোসলেম উদ্দিন জানান, এবার থার্টিফার্স্ট নাইটসহ পুরো পর্যটন মৌসুমে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানে বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে এবং সেভাবে মাঠে রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, এবারও পর্যটকরা থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজারমুখী হয়েছেন। পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতে এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একাধিক বৈঠকে প্রয়োজনী সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শুধু থার্টিফার্স্ট নাইট বা বর্ষবরণ নয়, ভরা পর্যটন মৌসুমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মনিটরিং কমিটি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবেন। তিনি জানান, সরকারিভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এবার উন্মুক্ত স্থানে থার্টিফাস্ট নাইটের কোনো আয়োজন করা যাবে না। তাই কক্সবাজারেও কাউকে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, এবারে থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষে এ পর্যন্ত ৭০ থেকে ৮০ ভাগ রুম বুকিং হয়েছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় সৈকতে উন্মুক্ত স্থানে কোনো আয়োজন হচ্ছে না। তাই এবার কক্সবাজারে পর্যটক আগমন আশানুরূপ হবে না। নতুন বছর ভালোভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস এবার একটি বিশেষ ছাড় দিচ্ছে। তা হচ্ছে রুমে দুজনের জায়গায় তিনজন, তিনজনের জায়গা চারজন এভাবে প্রতিটি রুমে অতিরিক্ত পর্যটক থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এ জন্য অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া হবে না। নিয়ন্ত্রিত মূল্যে সব রুম বুকিং দেওয়া হচ্ছে। তিনি কোনো দালালের মাধ্যমে হোটেল বুকিং না দেওয়ার জন্য পর্যটক অতিথিদের প্রতি অনুরোধ করেন। আবাসিক হোটেল অফিসার্স অ্যাসোশিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, এখন সব হোটেল অনলাইনে বুকিং নিচ্ছে। তাই কোনো দালালের কাছে না গিয়ে সরাসরি হোটেল বুকিং দিলে সাশ্রয় রেটে রুম দেওয়া সম্ভব। পটুয়াখালীর কলাপাড়া থেকে প্রতিনিধি জানান, থার্টিফার্স্ট নাইটকে সামনে রেখে পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় ব্যাপক পর্যটকের সমাগম হবে বলে আবাসিক হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষ আশা করছে। হোটেল মোটেল ও রিসোর্টগুলোর অধিকাংশ রুমই অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা জানান, পায়রা সেতু উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকেই কুয়াকাটায় পর্যটকদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল খালেক বলেন, ইংরেজি নতুন বছরে অসংখ্য পর্যটকের আগমনকে ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে। এ ছাড়া দর্শনীয় স্পটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মাদ শহিদুল হক বলেন, আবাসিক হোটেল মোটেলগুলোতে যাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে পারে এজন্য ভাড়ার মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো. শাহ আলম হাওলাদার জানান, তাদের সমিতির আওতাভুক্ত আবাসিক হোটেলের সব রুমই অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। তবে কোনো হোটেল মালিক যেন পর্যটকের ভিড়কে পুঁজি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে পারে এ জন্য সার্বক্ষণিক তদারকি করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *