সরকারি কর্মকর্তাদের অঙ্গীকার, জাতির পিতার অসম্মান হতে দেবো না

Slider জাতীয়


জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভার্যস্ক ভাঙার প্রতিবাদে সারা দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এই কর্মসূচিতে যোগ দেন বিচারকসহ বিচার বিভাগের কর্মীরাও। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর সম্মান রক্ষা সংবিধান স্বীকৃত বিষয়। এই সম্মান রক্ষায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বদ্ধপরিকর। নিজ বিভাগ ও দপ্তরের ব্যানারে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন, সমাবেশ, মিছিল ও পদযাত্রায় অংশ নেন।

‘জাতির পিতার সম্মান, রাখব মোরা অম্লান’-স্লোগানে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে কেন্দ্রীয়ভাবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সরকারি কর্মকর্তা ফোরামের ব্যানারে সমাবেশ হয়।

এতে সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বলেন, আমরা আমাদের জীবদ্দশায় জাতির পিতার প্রতি কোনো রকমের অন্যায় ও অসম্মান হতে দেবো না- এটাই হলো আজকের অঙ্গীকার। আমরা জনগণের সেবক।

সংবিধানে জাতির পিতা রয়েছেন। আমাদের দায়িত্ব সংবিধানকে সমুন্নত রাখা। আমরা যদি থাকি, তাহলে জাতির পিতার অবমূল্যায়ন হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা সমগ্র জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে এসেছি, এ রকম কোনো ঘটনা হতে দেবো না।

তিনি বলেন, আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী পালন করছি। কয়েকদিন পরেই আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছি, এই সময়ে মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙা অশুভ প্রয়াস। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে এইসব অশুভ প্রয়াস প্রতিহত করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, আমাদের পূর্বসূরিরা অনেক কিছু দিয়ে গেছেন, এর সাথে ব্যর্থতাও দিয়ে গেছেন। জাতির পিতা যখন সপরিবারে নিহত হন তখন আমরা সব সরকারি কর্মকর্তা কাজে নিয়োজিত ছিলাম। এ রকম কোনো ঘটনা আর আমরা ভবিষ্যতে ঘটতে দেবো না। আশা করি সহকর্মীরা আমার সাথে একমত।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আরো বলেন, এই (বঙ্গবন্ধু) মহাপুরুষের কারণে বাংলাদেশের মতো ভূখণ্ডের জন্ম হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কারণে বীর বাঙালি খেতাব পেয়েছি আমরা। ১৯৭১ সালে এ দেশের সাধারণ জনগণ লুঙ্গি পরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছে। বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে শান্তিরক্ষায় আমরা কাজ করছি।

মুখ্য সচিব এখন থেকে সবাইকে জয় বাংলা শব্দটি বলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জয়বাংলা শব্দটি মুক্তিযুদ্ধের। এখন থেকে শব্দটি ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনে সরকারের কাছে অনুমতি চাওয়া হবে। এ সময় তিনি জয়বাংলা স্লোগান দিলে উপস্থিত কর্মকর্তারাও জয় বাংলা স্লোগান দেন।

সমাবেশে স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংবিধানিকভাবে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃত। বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এখনও এই মহান নেতাকে অস্বীকার করে যাচ্ছে। তারা হুংকার দিয়ে যাচ্ছে যে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ওপর কোনো রকমের আঘাত, কোনো অপমান মেনে নেয়া হবে না, সহ্য করা হবে না।

সংবিধান ও রাষ্ট্রের ওপর আঘাত কঠোরভাবে মোকাবিলার ঘোষণা দেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সংবিধানের অংশ। বঙ্গবন্ধু দেশ ও পতাকা দিয়েছেন, মানচিত্র দিয়েছেন। তার ওপর হামলা হলো সংবিধান ও রাষ্ট্রের ওপর হামলা, জনগণের ওপর হামলা। রাষ্ট্র অবশ্যই তার আইন-বিধির মাধ্যমে এটি কঠোর হস্তে মোকাবিলা করবে।

সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন- বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের সভাপতি ও খাদ্যসচিব মোছাম্মাৎ নাজমানারা খানম, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের পক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের মহাসচিব বিকাশ কুমার সাহা, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের আ ম সেলিম রেজা, পররাষ্ট্র ক্যাডারের সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকার এবং আনসার ক্যাডারের শামসুল আলম প্রমুখ।

ওদিকে কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে একই ধরনের কর্মসূচি পালিত হয়। ছুটির দিন হলেও কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। চট্টগ্রামে জুডিশিয়ারি সার্ভিস এসোসিয়েশনের ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে শতাধিক বিচারকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *