প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের কর্মসূচিতে জে এস ডি’র অভিনন্দন

Slider রাজনীতি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের রাজপথে অবস্থান ও সাংবিধানিক দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের অঙ্গীকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার।

এক বিবৃতিতে বলেন, জাতির পিতার ভাস্কর্য বিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে সমাবেশ করেছেন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীগণ। তাঁরা ঘোষণা দিয়েছেন যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত জাতির পিতা। তাঁর বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য প্রজাতন্ত্রের কাছে গ্রহনযোগ্য নয়।

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। প্রকৃতপক্ষে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংবিধান রক্ষার যে দায়িত্ববোধ থেকে এই কর্মসূচিতে অগ্রসর হয়েছেন তাকে অভিনন্দন না জানানোর কোন বিকল্প নেই। সংবিধানকে রক্ষা করার জন্য প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সরাসরি অংশগ্রহণ জাতির জন্য খুবই জরুরি।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানে উল্লেখিত প্রতিটি মৌলিক অধিকার সমুন্নত এবং বাস্তবায়নের জন্য প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদেরই সর্বপ্রথম এগিয়ে আসতে হবে।
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ‘সাম্য, ‘মানবিক মর্যাদা’ ও ‘সামাজিক সুবিচারের’ আদর্শ নিয়েই বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করেছে।
পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে যে সংবিধান রচিত হয়েছে সেই সংবিধানকে সমুন্নত রাখার প্রাথমিক দায়িত্ব প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের। গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ সংবিধানের মৌলিক অধিকারের যেকোন ধারার ব্যত্যয় হলেই প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তা প্রতিহত করার জন্য নৈতিক মূল্যবোধ থেকে আজকের মতো প্রতিবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে।
ভবিষ্যতে ভোটাধিকার, আইনের শাসন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের প্রশ্নেও সাংবিধানিক চেতনা রক্ষার্থে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের এমনিভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

সংবিধানকে রক্ষার জন্য প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আজকের সমাবেশ প্রমাণ করে যে ব্রিটিশ এবং পাকিস্তানের ফেলে যাওয়া উপনিবেশিক আমলের শাসনব্যবস্থা দিয়ে বাংলাদেশকে আর শাসন করা যাচ্ছে না কারণ বিদ্যমান শাসনব্যবস্থা স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য উপযোগী নয়।

জাতির যে অংশ জ্ঞান-বিজ্ঞান মেধা-মননে এবং শিক্ষা-দীক্ষায় অগ্রগামী তারা কোনো না কোনোভাবে বিভিন্ন ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রজাতন্ত্রের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ভেতর দিয়ে দেশ স্বাধীন হলেও জাতির এই অগ্রগামী অংশকে উপনিবেশিক ধ্যান-ধারণা বশবর্তী হয়ে রাষ্ট্র বিনির্মাণের প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়েছে। বহু আগেই উপনিবেশিক বিধি-বিধান পরিহার করে জাতির এই অগ্রগামী অংশকে রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণী এবং বাস্তবায়নের সাথে সংযুক্ত করা প্রয়োজন ছিল। দেরিতে হলেও আজকের এই উপলব্ধি স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে মীমাংসিত বিষয় সমূহসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে বাঙালির তৃতীয় জাগরণের এই পর্যায়ে জাতি বিনির্মাণের অব্যাহত প্রক্রিয়ার পথ সুগম করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আজকের সমাবেশ প্রমাণ করে স্বাধীন দেশের উপযোগী শাসন ব্যবস্থা তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংবিধানকে রক্ষা করার জন্য আজকের যে নৈতিক প্রতিবাদ এবং আয়োজন তার একটিসাংবিধানিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া খুবই জরুরি।

এ লক্ষ্যে সুস্পষ্ট দাবি হচ্ছে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ সৃষ্টি করে সেই উচ্চকক্ষে (১) ক্যাডার সার্ভিসের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা, (২) সরকারি-বেসরকারি নন ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, (৩) প্রতিরক্ষা বাহিনী অর্থাৎ সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌ বাহিনী, পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করাসহ (৪) অন্যান্য শ্রম, কর্ম ও পেশাজীবীদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।
এ ধরনের শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটাবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *