সত্যতা পায়নি পুলিশ নুরকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ

Slider রাজনীতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল দুপুরে পল্টনের জামান টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নুর। তার আগে গত বুধবার রাতে ঘটনার পর ডিএমপি’র হাতিরঝিল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। নুর অভিযোগ করেছেন, গত বুধবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় প্রাইভেটকার দিয়ে দুই দফা হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে তাকে। ওই গাড়িতে বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয় লেখা স্টিকারযুক্ত ছিল।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, নুরকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ সত্য নয়। অভিযোগ করার পর তাৎক্ষণিকভাবে আমরা ঘটনার তদন্ত করি। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি।

ওদিকে, সংবাদ সম্মেলনে নুর জানান, বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় পল্টনের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে বাড্ডার বাসায় ফিরছিলেন তিনি ও তার ভাই আমিনুল ইসলাম।

মালিবাগ ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো গ- ৩১-৬৫০৮) তাদের মোটরসাইকেলকে অনুসরণ করে। এ সময় গাড়িটি পরপর দুইবার তাদের মোটরসাইকেলকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে। নুর বলেন, মোটরসাইকেলটির চালক আমার ছোট ভাই আমিনুল কৌশলে ধাক্কা এড়িয়ে যায়। ফলে প্রাইভেটকারটি একটি বাসকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়। হাতিরঝিল থানাধীন ডিআইটি রোডের আবুল হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বাসকে ধাক্কা দেয়ার পরেও চালক গাড়িটিকে পেছনে নিয়ে পুনরায় মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়ার চেষ্টা করে। নুরের সহযোগী সোহরাব ও শাকিল উজ্জামান পেছনের আরেকটি গাড়িতে থেকে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন বলে জানান তিনি। নুর বলেন, ঘটনাস্থলে থাকা সোহরাব ও শাকিল গাড়িটি ধাক্কা দেয়ার পর চালককে জিজ্ঞাসা করলে তিনি নিজেকে খন্দকার সাব্বির আহম্মেদ নামে পরিচয় দেন। গাড়িটি একজন সচিবের ছেলের বলে জানিয়েছেন তারা। বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয় লেখা স্টিকারযুক্ত ছিল। চালকসহ মোট দুইজন ব্যক্তি ছিল গাড়িতে। সাবেক ভিপি নুর জানান, এ সময় আত্মরক্ষার্থে তিনি মোটরসাইকেলে না থেকে উবার অ্যাপসে ভাড়ায় চালিত একটি গাড়িতে আশ্রয় নেন।

নুরুল হক নুর বলেন, এটি পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। পুলিশ তাদের পরিচয় জানার পরে অভিযুক্ত গাড়িটিকে থানায় না নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত অপর বাসটির চালক ও হেলপার ক্ষতিপূরণ চাইতে গেলে পুলিশ তাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। পুলিশের ভাষ্যমতে চালক একজন সিনিয়র সচিবের ছেলে। তাদের পরিচয় জানার পরই ছেড়ে দেয় পুলিশ।

বর্তমানে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে বলেন, মামলা নেয়ার বিষয়ে প্রায় এক ঘণ্টা কালক্ষেপণ করেছে পুলিশ। এক পর্যায়ে হাতিরঝিল থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করলে থানা থেকে কোনো রিসিভ কপি আমাকে দেয়া হয়নি। তারা শুধুমাত্র অভিযোগটি রেখে দিয়েছেন। সড়কের ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারলেও তারা গড়িমসি করছে। তারা মামলাটি আদৌ গ্রহণ করেছে কিনা নিশ্চিত নই। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি সংগঠনের অন্যান্য নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদ খান বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ১১ বার নুরকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়েছে। সর্বশেষ গত বুধবারের ঘটনায় চালক একবার বলেছেন, ব্রেক ফেইল হয়েছে। আরেকবার বলেছেন, ছিনতাইকারী ধাওয়া করতে গিয়ে এমন হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *