বেইজিং পরিস্থিতি চরমমাত্রায় ভয়াবহ’

Slider জাতীয়

চীনে করোনা ভাইরাসের নতুন সংক্রমণ নিয়ে চারদিকে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বেইজিং শহরের মুখপাত্র সু হেজিয়ান সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, বর্তমানে বেইজিংয়ের করোনা পরিস্থিতি চরমমাত্রায় ভয়াবহ। এ অবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি কাজ হলো- একে প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ করা। বার্তা সংস্থা এএফপিকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। এতে বলা হয়, বেইজিংয়ে নতুন করে ২৭ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর মঙ্গলবার ওই সংবাদ সম্মেলন করেন সু হেজিয়ান। ধারণা করা হচ্ছে, কোভিড-১৯ নতুন করে বিস্তার লাভ করছে রাজধানীর সিনফাদিতে খাদ্যের পাইকারি বাজার থেকে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে চীন। কারণ, এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চীনে হলেও তারা গণহারে পরীক্ষা এবং কড়া লকডাউন আরোপের মধ্য দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে এনেছিল।
কিন্তু নতুন সংক্রমণ দেখা দেয়ায় গত ৫ দিনে চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ১০৬, যদিও কর্তৃপক্ষ শহরের প্রায় ৩০টি কমিউনিটি বা এলাকা লকডাউন করে দিয়েছে। কয়েক হাজার মানুষকে পরীক্ষা করা হয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সু হেজিয়ান। তিনি পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন। ওদিকে নতুন করে চীনে ক্লাস্টার বা করোনার গুচ্ছের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা। বেইজিংয়ের বিস্তার এবং এর সঙ্গে সারা দেশ এবং বিশে^র সংযুক্তির দিকে ইঙ্গিত করেছে তারা। রাজধানীর কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা শহরে খাদ্যের সব বাজার, রেস্তোরা এবং সরকারি ক্যান্টিনের সব মালিক, ম্যানেজারের পরীক্ষা করবে। সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলছে, বেইজিংয়ে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে দিনে ৯০ হাজার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর পরিবহন বিষয়ক কমিশন সব ট্যাক্সি এবং রাইড-হলারকে নিষিদ্ধ করেছে। তারা রাজধানী ছেড়ে বাইরে যেতে পারবে না। করোনা ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে এসব হচ্ছে নতুন উদ্যোগ। সোমবার বেইজিং ও অন্য কিছু শহরের সব ইন্ডোর স্পোর্টস এবং বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। রাজধানী থেকে কেউ বাইরে গেলে তাকে কোয়ারেন্টিনে রাখার সতর্কতা দেয়া হয়েছে।
চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন হুবেই প্রদেশে আরো নতুন করে চারজন আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিযেছে। এই প্রদেশটি বেইজিংকে বেষ্টন করে আছে। এ ছাড়া করোনা আক্রান্তের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ সিচুয়ান থেকে। ফলে রাজধানী বেইজিং থেকে কেউ এলাকায় ফিরেছেন কিনা তা শনাক্তে কাজ করে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তাদেরকে পরীক্ষা করাতে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ আরো একটি মার্কেট বন্ধ করে দিয়েছে। এটি হলো কেন্দ্রীয় অঞ্চল সিচেং জেলার তিয়ানতাওহোঙলিয়ান। সেখানকা একজন কর্মীর দেহে করোনা ভাইরাস পাওয়া যাওয়ার পর এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ওই মার্কেটের আশপাশে সাতটি আবাসিক এস্টেটকে লকডাউন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা ২৭৬টি কৃষিভিত্তিক মার্কেট জীবাণুমুক্ত করেছেন। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ১১টি মার্কেট। ৩৩ হাজার খাদ্য ও বেভারেজ ব্যবসায়ে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। এর আগে রোববার কর্মকর্তারা সতর্ক করে যে, ৩০ মে থেকে সিফাদি মার্কেটে গিয়েছেন কমপক্ষে দুই লাখ মানুষ। এই মার্কেট থেকে নতুন করে করোনা ছড়িয়েছে। মার্কেটের কমপক্ষে ৮ হাজার কর্মীকে পরীক্ষা করে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে কোয়ারেন্টিনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *