কলকাতায় ‘গোলি মারো’ স্লোগানের বিরুদ্ধে এফআইআর

Slider জাতীয়

কলকাতা: দিল্লির দাঙ্গার উস্কানি হিসেবে চিহ্নিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের ‘গোলি মারো’ স্লোগানের প্রতিধ্বনি শোনা গেছে কলকাতায় বিজেপির মিছিলেও। রবিবার শহীদ মিনারে অমিত শাহর সভায় যাওয়ার পথে বিজেপির মিছিল থেকে বিভিন্ন জায়গায় আওয়াজ উঠেছিল ‘দেশ কে গদ্দারোঁ কো, গোলি মারো সালোঁ কো’। নাগরিকত্ব আইনের বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বিজেপি সমর্থকদের বলতে শোনা গেছে, ‘কিসকো চাহিয়ে আজাদি? ফাড় দেঙ্গে আজাদি’র মতো স্লোগান। তবে পুলিশের সামনেই রবিবার দুপুরে ওই ঘটনার পরে বিজেপি সমর্থকরা বিনা বাধায় সভায় যোগ দিতে চলে গিয়েছিলেন। যার জেরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা। এরপরেই রাতের দিকে কলকাতা পুলিশ উস্কানিমূলক স্লোগান দেয়ার অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে। হুমকি প্রদর্শন, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শক্রতা সৃষ্টির চেষ্টা, গোষ্ঠী সংঘর্ষের প্ররোচণা, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ দেখে স্লোগান যারা দিয়েছে তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছে।

দিল্লির মতোই কলকাতাতেও গোলি মারো স্লোগান দেয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে রাজ্যের বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক নেতারা। প্রবীণ লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেছেন, এমন স্লোগান শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই দলটা গণতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা কিছুরই তোয়াক্কা করে না। তিনি প্রশ্ন করেছেন, আমরা কি চরম নৈরাজ্যের দিকে এগোচ্ছি ? অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ও বলেছেন, এই দলটার আচার-আচরণ সবকিছুই অগণতান্ত্রিক। পুরোপুরি নিজের খুশিমতো ফ্যাসিস্ট কায়দায় চলছে। সিপিআইএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম স্লোগান দাতাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বলেছেন, অমিত শাহের সাঙ্গপাঙ্গদের এত ভয় কেন? কেন একজনকেও ধরা গেল না সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, বিজেপির সংস্কৃতি এটাই। কিন্তু পুলিশ ওই স্লোগানের পরেও কেন বিজেপি সমর্থকদের যেতে দিল, সেটাই সবচেয়ে বড় রহস্য। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার কথা জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, যারা স্লোগান দিয়েছে, তারা এই শহরেরই লোক নাকি বাইরে থেকে আসা, তা খুঁজে বার করতে হবে। রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেছেন, বাংলায় গুলি করার স্লোগান দিয়ে মানুষের মন জয় করা যাবে না। এখানে মানুষকে জয় করতে হবে ভালবাসা দিয়ে। ওদের গুলির যা শক্তি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানুষকে ভালবাসার শক্তি তার চেয়ে অনেক বেশি। অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ‘গোলি মারো’ স্লোগানের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, আমার এতে কোনও বিরোধিতা নেই। আমিই তো বলেছিলাম, দেশের সম্পত্তি যারা নষ্ট করছে, তাদের গুলি করা উচিত। তবে কেউ ওই স্লোগান দিয়ে থাকলে তাদের ভাষাটা যেন ভদ্র হয়। বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারের অভিযোগ, বিজেপির মিছিলে লোক ঢুকিয়ে বাম ও কংগ্রেস এই কান্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *