সকলেই স্বাক্ষর দিয়েছি, লাশ দাফন হয়েছে, আমাদের অভিযোগ নেই

Slider টপ নিউজ

গাজীপুর: ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী(গাড়ি চালক) আলী আশরাফ(৫৬)। গ্রামের বাড়ি শেরপুর সদর থানার কুমারীর চর গ্রামে। তবে স্বপরিবারের তিনি থাকতেন গাজীপুর শহরের সাহাপাড়া এলাকায় নিজের দোতলা বাড়ির নীচতলায়। মঙ্গলবার রাতে তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। দোতলার ভাড়াটিয়ার নিকট ভাড়া চাইতে গিয়ে উত্তেজিত হওয়ার পর তার তাৎক্ষনিক মৃত্যু হয় বলে পরিবার দাবী করলেও ময়না তদন্ত ও মামলা ছাড়াই শেরপুরে নয় গাজীপুর সরকারী গোরস্থানে লাশ দাফন হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ এসেছে। পুলিশ আশরাফের পরিবারের সকলের স্বাক্ষর নিয়েছে বলে দাবী করে আশরাফের মেয়ে বলেছেন, সকলেই পুলিশের কাছে স্বাক্ষর দিয়েছি, আমাদের অভিযোগ নেই।

১৯ মার্চ মঙ্গলবার রাত ১০টার পর ওই ঘটনা ঘটে।

সরেজমিন জানা যায়, আলী আশরাফের দোতলা বাড়ির দোতলায় পিউর লাইফ জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়গনষ্টিক নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আশরাফের মেয়ে ফাতেমা আক্তার উর্মী একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন। উর্মী জানান, তার বাবা হার্টের রোগী। সম্প্রতি ভারত থেকে চিকিৎসা করিয়ে এনেছেন। মঙ্গলবার রাতে বাসা থেকে তার বাবা দোতলার ভাড়াটিয়া হাসপাতালে যায় বকেয়া ভাড়ার জন্য। কিছুক্ষন পর তার বাবা ঘরে ফেরার জন্য সিঁড়িতে নামতে নামতে বলেন, ভাড়াটিয়া বলেছেন, ভাড়া দিবে না, আমাকে রেললাইনে ফেলে মেরে ফেলবে। এর কিছুক্ষর পর আশরাফ হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তারপর তাকে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন।

আশরাফের মেয়ে উর্মী আরো জানান, হাসপাতালে তাৎক্ষনিকভাবে তিনি চিৎকার করে বলেছেন, তার বাবাকে ওরা মেরে ফেলেছে। এই খবর হপাসাতালে থাকা এক নারী পুলিশ সদস্য শুনে থানায় ফোন করেন। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। পুলিশ এসে হাসপাতালের তিন মালিকের মধ্যে রমজান আলী নামে একজন মালিককে আটক করে পুলিশের গাড়িতে উঠায়। এসময় পুলিশ এসে তাদের বাসার সকলের( আশরাফের স্ত্রী, ৩ মেয়ে ও এক ছেলে) স্বাক্ষর নিয়ে আটককৃতকে ছেড়ে দিয়ে যায়। তারপর আশরাফের মরদেহ ময়না তদন্ত ছাড়া গাজীপুর সরকারী গোরস্থানে দাফন করা হয়।

উর্মী আরো জানান, লাশ কাটা হবে ও বকেয়া ভাড়া দিয়ে ব্যাংকের দেনা পরিশোধ করা হবে এই কারণে তিনি কোন মামলা মোকদ্দমা করবেন না।

এ বিষয়ে হাপসাতালের মালিক পক্ষের একজন আটক হওয়া( পরে মুক্ত) রমজান আলী বলেছেন, পুলিশ আমাকে গাড়িতে তুলেছিল। পরে তদন্ত করে ছেড়ে দিয়েছে। আমরা আশরাফের সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করিনি। তিনি অসুস্থ ছিলেন। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। তবে আগামী শনিবার এই বিষয়ে আশরাফের পরিবারের সাথে বৈঠক হবে।

এদিকে আলী আশরাফের অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ থাকা সত্বেও কেন মামলা করা হবে না এই প্রশ্নের জবাবে তার পরিবারর পক্ষ থেকে মেয়ে উর্মী বলেন, আমি আইনের ছাত্রী। হাইকোর্টে রীটও করতে পারব। কিন্তু এখন করব না।

এ বিষয়ে জিএমপি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সমীর চন্দ্র সূত্রধর বলেছেন, এ বিষয়ে কোন মামলা বা জিডি হয়নি। অসুস্থ মানুষ ভাড়া-টারা নিয়ে উত্তেজিত হয়েছিলেন মনে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *