সৌদি আরবে তেলের চেয়ে পানির দাম বেশি বলে মনে করেন অনেকেই। কারণ সেখানে যত সহজে জ্বালানি তেল পাওয়া যায় পানি তত সহজলভ্য নয়।
তবে এবার আর সেই পরিস্থিতি থাকছে না।
রাজস্ব সংকটে পড়ে এবার সে দেশই তেলের দাম বাড়াবে। সম্প্রতি ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ বাজারে পেট্রল ও জেট ফুয়েলের দাম বাড়াবে সৌদি আরব। আগামী জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হবে। মূলত জ্বালানি ভর্তুকি কমানোর পাশাপাশি অর্থনীতি শক্তিশালী করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, পেট্রলের দাম প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়ানো হবে। এর পাশাপাশি জেট ফুয়েলের দাম বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক দামের সমপরিমাণ করা হবে। অন্যান্য ধরনের ফুয়েল এবং বিদ্যুতের শুল্কও বাড়ানো হবে আগামী বছরগুলোতে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি সৌদি আরবের অর্থ মন্ত্রণালয়।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় কয়েক বছর ধরেই রাজস্ব সংকটে আছে সৌদি আরব।
দেশটির রাজস্ব আয়ের ৯০ শতাংশ আসে তেল রপ্তানি থেকে। কিন্তু তেলের দর ১১৪ ডলার থেকে ক্রমান্বয়ে ৫০ ডলারের নিচে নেমে যাওয়ায় দেশটির রাজস্ব আয়ে ধস নামে। এ অবস্থায় যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান অর্থনৈতিক সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। এর অংশ হিসেবেই জ্বালানি তেলে দেওয়া বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি ক্রমান্বয়ে তুলে নেবে সৌদি সরকার। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এক পূর্বাভাসে জানায়, সৌদি আরব যে হারে ব্যয় করছে, সেই সঙ্গে যদি জ্বালানি তেলের দাম আরো কমতে থাকে তবে আগামী পাঁচ বছরে সম্পদশূন্য হয়ে পড়বে দেশটি। আইএমএফের বারবার সতর্কবার্তার ফলে রাষ্ট্রীয় ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেয় সৌদি আরব। এরই অংশ হিসেবে জ্বালানি ভর্তুকি কমিয়ে আনবে দেশটি, সেই সঙ্গে অর্থনীতিতেও বৈচিত্র্য আনবে।
সৌদি আরব ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্রথম জ্বালানি তেল থেকে ভর্তুকি কমায়। ওই সময় দাম ৪০ শতাংশ বেড়ে প্রতি লিটার ০.২৪ ডলার হয়। সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার