বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে একটি জাতীয় মেধা তালিকা করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সনদের কোনো মেয়াদকাল থাকবে না বলেও উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার কয়েক দফা নির্দেশনাসহ এ রায় দেন।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম, এ বি এম আলতাফ হোসেন, হুমায়ুন কবির, সাহাবুদ্দীন খান লার্জ ও ইশরাত হাসান প্রমুখ। শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী কাজী মাঈনুল হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
নিবন্ধন সনদধারী রাজশাহীর আরিফুল ইসলামসহ ১১২ জন নিবন্ধন সনদের মেয়াদ তিন বছর এবং জেলা ও উপজেলাভিত্তিক মেধা তালিকা পদ্ধতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে চলতি বছর রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে কয়েক হাজার ব্যক্তি পৃথক রিট করলে রুল হয়। পৃথক ১৬৬টি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হওয়া রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়। বৃহস্পতিবার আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করে রায় দেওয়া হয়।
রায়ে সাত দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে রিট আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী হুমায়ুন কবির বলেন, রায়ে বলা হয়েছে, নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সনদের কোনো মেয়াদকাল থাকবে না, এর মেয়াদকাল হবে নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত। আগে এটি তিন বছর ছিল। রায়ের কপি পাওয়ার পর থেকে ৯০ দিনের মধ্যে উত্তীর্ণদের নিয়ে একটি জাতীয় মেধা তালিকা করতে বলা হয়েছে। এই তালিকা দৃশ্যমান হতে হবে, এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করতে হবে।
এনটিআরসিএ আইনজীবী কাজী মাঈনুল হাসান বলেন, একটি জাতীয় মেধা তালিকা করতে হবে রায়ে বলা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা মেধা তালিকার বিধান বাতিল করা হয়েছে। শুধুমাত্র জাতীয় মেধা তালিকা করতে বলা হয়েছে। প্রতিবছর এই মেধা তালিকা এনটিআরসিএ হালনাগাদ করতে বলা হয়েছে। নিয়োগের উদ্দেশ্যে এনটিআরসিএ কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বরাবর যদি কোনো সুপারিশ করে তবে কপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। তা না হলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা কমিটি বা গভর্নিং কমিটি বাতিল করতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডকে বলা হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করতে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।