আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা মেডিসিনস স্যানস ফ্রন্টিয়ারস (এমএসএফ) বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে এক জরিপ চালিয়ে জানিয়েছ ২৫ আগস্ট থেকে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় নয় হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ৭১ শতাংশ বা ৬৭০০ জন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতায় নিহত হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ৫ বছরের কম বয়সী ৭৩০ শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তারা সেনা অভিযানে ৪০০ রোহিঙ্গার প্রাণহানির তথ্য স্বীকার করেছে। তবে আন্তর্জাতিক এ দাতব্য সংস্থা বলছে, ব্যাপক সহিংসতার ঘটনায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতার পরিষ্কার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী সহিংসতার জন্য সন্ত্রাসীদের দায়ী করেছে এবং তারা কোনো অন্যায় কাজ করার দাবি অস্বীকার করেছে। নিহতদের অধিকাংশই মুসলিম সন্ত্রাসী বলে দাবি করে মিয়ানমার।
এমএসএফ বলছে, আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ৬ লাখ ৪৭ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে গেছে।
দাতব্য সংস্থাটির জরিপে দেখা গেছে, সহিংসতার কারণেই ৫ বছরের কম বয়সী ৭৩০ শিশুসহ ৬ হাজার ৭০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কয়েক প্রজন্ম ধরে বসবাস করলেও সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিকত্ব নেই মিয়ানমারে। দেশটির সরকার এই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী হিসেবে মনে করে।
এমনকি দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সরকার রোহিঙ্গা শব্দটিও ব্যবহার করে না, বরং তাদের বাঙালি মুসলিম হিসেবে ডাকা হয়।
সাংবাদিক ও গবেষকরা শরণার্থীদের সাক্ষাৎকার নেয়ায় সাম্প্রতিক সহিংসতা বিষয়ে কিছু তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আরো জোরালো হচ্ছে।
এমএসএফ’র সুশৃঙ্খল এ গবেষণা চিত্র মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর পরিচালিত অভিযান যে যথেষ্ট নৃশংস ছিল এবং তাদের এই নৃশংসতাই মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মামলা দায়েরের জন্য যথেষ্ট বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
সূত্র : এমএসএফ ওয়েবসাইট