বিএনপিকে চাপে রাখতে সরকার মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দলের স্থায়ী কমিটির নেতাদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেছেন, ‘আমার মামলা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ’
গতকাল রবিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে দলটির একজন নেতা এ কথা জানান।
ওই নেতা বলেন, বকশীবাজারের বিশেষ আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলা চলছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য শেষ করেছেন খালেদা জিয়া। আগামী ১৯, ২০, ২১ ডিসেম্বর এ মামলার পরবর্তী তারিখ। এর পরই এ বিষয়ে আদালত রায় দেবেন। এ পরিস্থিতিতে দলীয় প্রধানের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। খালেদা জিয়া নেতাদের আশ্বস্ত করেছেন। এরপর তিনি এ বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনা দেন।
ওই নেতা আরো জানান, এর পরপরই আলোচনায় স্থান পেয়েছে রংপুর ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়টি। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যের নেতৃত্বে রংপুরে প্রচার চালাতে যাবে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। আর ঢাকা উত্তরে নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। এ ক্ষেত্রে তাবিথ আউয়াল ছাড়া আর কাকে যোগ্য মনে হয় সে বিষয়টি ভেবে দেখতে বলেছেন। কোনো কারণে তাবিথ আউয়ালের মনোনয়ন বাতিল হলে সেখানে যাতে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী দেওয়া যায় সে বিকল্প রাখতে বলেছেন তিনি। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেখে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান তিনি।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার গণভবনে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যসহ ক্ষমতাসীনদের অপপ্রচার রুখতে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সজাগ ও সভা-সেমিনারে জোরালো বক্তব্য দেওয়ার পরামর্শ দেন খালেদা জিয়া।
অন্যদিকে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বীকৃতি দেওয়ারও নিন্দা জানানো হয় বৈঠকে।
একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের সাংগঠনিক বিষয়াদি আলোচনার পাশাপাশি বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং তাদের জেলহাজতে পাঠানোর সমালোচনাও করা হয় বৈঠকে। এসব বিষয়ে জ্যেষ্ঠ নেতাদের বেশ কিছু দায়িত্ব দিয়েছেন বিএনপিপ্রধান।
এর আগে রাত ৯টায় খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়। চলে পৌনে ১১টা পর্যন্ত। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।