ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় চার বোনকে উত্ত্যক্ত করা বখাটে সেই তরুণ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। এ কারণে চার বোন ও তাদের পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। এদিকে ওই তরুণ এক বোনের আপত্তিকর ছবি মুঠোফোনে ছড়িয়ে দিয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মেয়েটির বাবা গতকাল শুক্রবার বলেন, ‘বখাটে দেলোয়ার গ্রামে না থাকলেও তার সহযোগীরা এখনো কৌশলে উত্ত্যক্ত করে যাচ্ছে। এখনো তাঁর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমি পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি। কয়েক দিন ধরে স্থানীয় বাজারের মানুষ বলাবলি করছে, ওই বখাটের মাধ্যমে আমার মেয়ের আপত্তিকর ছবি মুঠোফোনে ছড়িয়ে পড়েছে। বাজারের একজন ব্যবসায়ী এক তরুণের মুঠোফোন থেকে এসব আপত্তিকর ছবি মুছে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে তিনি আশঙ্কা করছেন, ছবি আরও অনেকের মুঠোফোনে ছড়িয়ে পড়তে পারে।’
থানা-পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, ওই চার বোনকে স্কুল-কলেজে যাওয়ার পথে একই গ্রামের মো. দেলোয়ার উত্ত্যক্ত করে আসছিল। বছর খানেক আগে দেলোয়ার চার বোনের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় দেলোয়ার প্রথমে মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করত। পরে তার কলেজপড়ুয়া বড় বোন এবং তৃতীয় ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া বোনকেও স্কুল-কলেজে যাওয়ার পথে দেলোয়ার ও তার সহযোগীরা উত্ত্যক্ত করত। গত ২৬ নভেম্বর বাড়ি থেকে কোচিং সেন্টারে পড়তে যাওয়ার সময় দেলোয়ার সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েটিকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। পরে একটি বাজারে নিয়ে মেয়েটির আপত্তিকর ছবি তোলে। এ ঘটনায় ওই দিন মেয়েটির পরিবার গৌরীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। ১ ডিসেম্বর মেয়েটির পরিবার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানায়। এরপরও দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে ৫ ডিসেম্বর ‘বখাটের ভয়ে চার বোনের পড়াশোনা বন্ধের পথে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেদিন সন্ধ্যায় পুলিশ দেলোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা নেয়। এরপর পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়েও আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েটি বলে, ‘দেলোয়ার আমাকে তুলে নিয়ে জোর করে আপত্তিকর ছবি তোলে। এসব ছবি সে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও মো. দেলোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তার মা ছেলের বিরুদ্ধে উত্ত্যক্তকরণের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
জানতে চাইলে গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার আহমেদ বলেন, মামলার পর থেকে আসামি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।