ভ্রমণ : প্রাচীনতম রেইন ফরেস্ট ‘তামান নেগারা’

Slider বিচিত্র

141716tamannegara006

 

 

 

 

আপনি কি বলতে পারেন, এই পৃথিবীর প্রাচীনতম রেইন ফরেস্টটি কোথায় অবস্থিত? প্রথমেই ভাবতে পারেন আমাজন। কিন্তু আপনি ভুল।

এই ভুলটা অবশ্য অনেকেই করেন। মালয়েশিয়ার তামান নেগারার বয়স ১৩০ মিলিয়ন বছর! মালয় ভাষায় তামান নেগারার আক্ষরিক অর্থ ‘জাতীয় উদ্যান’। পুরো ৪৩৪৩ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে এই বনাঞ্চল। যা কিনা বিশ্ব পর্যটকদের কাছে এক ভিন্ন আবেদন সৃষ্টি করেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন রেইন ফরেস্টে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অন্যরকমই হবে।

অপূর্ব সুন্দরও বটে। এর মধ্য দিয়ে একটা নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। নৌকা দিয়ে চলার সময় এক জাদুকরী ধীরস্থিরভাব আপনাকে আচ্ছন্ন করবে। তবে এ অঞ্চলের গোটা স্বাদ পেতে পাহাড়ের পথ বেয়ে ট্র্যাকিং করতে হবে।

জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হবে। আরো আছে গুহা। এসবে অভিযান চালাতে পারবেন। মাছ ধরা, ক্যাম্পিং, রাতে বনের পরিবেশে হাঁটাহাঁটিসহ অনেক রোমাঞ্চকর কাজ আছে করার।

রেইন ফরেস্টে প্রবেশ করা মাত্র আপনি চারদিকটা আবিষ্কারের চাইবেন। এতে কোনো বাধা নেই। পুরনো প্রকৃতিকে একেবারে কাছ থেকে উপভোগ করতে পারবেন। নানা প্রজাতির প্রাণী দেখবেন সেখানে। থিক-বিলড পিজন, ব্লু-ইয়ার্ড বারবেট, এশিয়ান ফেয়ারি-ব্লুবার্ড, ব্লু-উইংগড লিফবার্ড, গ্রিন ব্রডবিল, রাইনোসেরোস হর্নবিল আর ইয়েলো-ইয়েন্টেড ফ্লাওয়ারপেকার তো আছেই। যদি জুন বা জুলাইয়ের দিকে যান, তবে রাজসীক আর্গাস অবলোকনের সুযোগ মিলবে।

বনের মধ্যে অনেক ট্রেক আছে। অভিযানের এমন পথও রয়েছে যেখানে অনায়াসে ৯ দিন ব্যয় করা যাবে। তবে তা দৈহিকভাবে চ্যালেঞ্জের বিষয়। সবচেয়ে উপভোগ্য হবে এক সাফারি পার্কে রাতে ভ্রমণ। অনেক ফুল আছে যা রাতে ফোটে। সেখানকার কিছু শ্যাওলা জ্বলতে থাকে। দেখতে কল্পলোকের কোনো রাজ্যের মতো মনে হয়।

যদি তামান নেগারাতে যান, তবে ক্যানোপি ওয়াক কখনও মিস করবেন না। হাজার হলেও এটা বিশ্বের দীর্ঘতম ক্যানোপি ওয়াক যা ৫৩০ মিটার দীর্ঘ এবং ৪০ মিটার প্রস্থ। যদিও প্রথমদিকে একটু ভয় লাগবে। কিন্তু ভয়কে জয় করতে পারলেই অসাধারণ। প্রাথমিক অবস্থায় সাপগুলো ভয়ের কারণ হয়। তবে শিগগিরই ছন্দ ফিরে পাবেন। এই পথে যেতে যেতে বনের ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ পাবেন।

এই রেইন ফরেস্ট কিন্তু কাম্পাং ওরাং আসলি নামের এক আদিবাসীদের রাজ্য। সামান্য পথে নৌকাভ্রমণের মাধ্যমে তাদের কাছে পৌঁছানো যায়। ছোট একটি দ্বীপে বাতেক এবং সেমোকবেরি নামের দুই গোত্রের বাস। তাদের যাযাবর প্রকৃতির জীবন একেবারে সামনাসামনি দেখতে পারবেন। তারা কীভাবে জীবনযাপন করে, শিকারের অস্ত্র তৈরি করে তার সবই দেখতে পারবেন।

সবমিলিয়ে তামান নেগারাতে গেলে সে ভ্রমণের কথা বাকি জীবনের জ্বলজ্বলে স্মৃতি হয়ে থাকবে। কুয়ালালামপুর থেকে গাড়িতে যেতে সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা সময় লাগবে সেখানে যেতে। তা ছাড়া কুয়ালা টেম্বেলিং থেকে জলপথে কুয়ালা তাহান জেটিতে পৌঁছতে পারবেন। সেখান থেকে আবার আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টার পথ তামান নেগারা।
সূত্র : হ্যাপি ট্রিপস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *