ডাকব্যবস্থা প্রচলনের আগে চিঠিপত্র পাঠানোয় মানুষের ভরসা ছিল কবুতর। ঠিকঠাক পৌঁছে যেত সে চিঠি। ডাক হরকরা বা রানারের দৌড়ে চলার ইতিহাসেরও আগের কথা এটি। এরপরও কবুতরের বুদ্ধি নিয়ে মানুষের মনে হয়তো প্রশ্ন রয়ে গিয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা এবার সে প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন। বললেন, কবুতরের বুদ্ধি অনেক। তারা স্থান ও সময়ের মতো জটিল বিষয়গুলো কেবল বুঝতেই পারে না, সিদ্ধান্তও নিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের জীববিজ্ঞান–বিষয়ক সাময়িকী কারেন্ট বায়োলজিতে এ–সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যের আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক নতুন এই গবেষণাটি করেছেন। তাঁরা বলেছেন, বাড়ির আঙিনায় বা ছাদে চুপটি মেরে বসে থাকা কিংবা নিজেদের মধ্যে ঠোকাঠুকি করতে থাকা কবুতরগুলোকে বুদ্ধিহীন বা কম বুদ্ধির মনে হতে পারে। কিন্তু এই পাখিগুলো আসলে তাদের ছোট্ট মাথায় অনেক বুদ্ধি রাখে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, মানুষের মস্তিষ্কের বহিঃস্তরের একটি অংশের নাম প্যারাইটাল করটেক্স। এই জায়গার কাজ হলো উচ্চপর্যায়ের চিন্তাগুলো প্রক্রিয়া করে বক্তব্য তৈরি ও সিদ্ধান্ত নেওয়া। মস্তিষ্কের এই স্তরের কল্যাণে মানুষ সময় ও স্থান সম্পর্কেও বুঝতে পারে। বিজ্ঞানী মহল এত দিন জানত, কবুতরের মস্তিষ্কে এ ধরনের অংশ না থাকায় তারা জটিল বিষয়গুলো বুঝতে পারে না। কিন্তু আইওয়ার ওই বিজ্ঞানী দল তাঁদের গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন, প্যারাইটাল করটেক্স না থাকলেও কবুতর সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
গবেষক দলের একজন অধ্যাপক এডওয়ার্ড ওয়াসারম্যান। তিনি বলেন, মস্তিষ্কের অন্য অংশের ব্যবহার করে কবুতর জটিল বিষয়গুলো বুঝতে পারে, সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, পাখি, সরীসৃপ, মাছের মতো প্রাণীরাও হয়তো উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম।