বাড়ির কর্তা অনেক সময় অফিস থেকেই হোক, কি নিজ উদ্যোগে, নিজের স্বাস্থ্যের রুটিন চেকআপ করিয়ে নেন। কিন্তু বাড়ির নারী সদস্যটি অনেক সময় থাকেন অন্ধকারে। বছর বছর কোনো রুটিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা তাঁর করা হয়ে ওঠে না। অন্তত বয়স বেড়ে শরীর খারাপ লাগার আগ পর্যন্ত তো নয়ই। তার মানে কি নারীদের রুটিন চেকআপের প্রয়োজন নেই? তা নয়। পুরুষদের মতো নারীদেরও উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি আছে। বরং নারীরা এর বাইরে আরও কিছু রোগের ঝুঁকিতে থাকেন, যেখানে রুটিন পরীক্ষার ভূমিকা আছে। যেমন স্তন ক্যানসার, জরায়ু বা জরায়ুমুখের ক্যানসার। আবার কিছু রোগ আছে যা নারীদের বেশি হয়। যেমন-থাইরয়েডের সমস্যা বা নানা ধরনের বাত। তাই নারীদেরও রুটিন পরীক্ষার দরকার আছে। এখন জেনে নিন কী হতে পারে আপনার এই সব রুটিন পরীক্ষা।
পূর্ণবয়স্ক নারীদের বছরে অন্তত একবার রক্তচাপ মাপা উচিত। ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রক্তে শর্করা বা চর্বি পরীক্ষা শুরু করা উচিত। যদি আপনি ওজনাধিক্য বা স্থূলতায় ভোগেন, পরিবারে ডায়াবেটিস বা হৃদ্রোগের ইতিহাস থাকে, তবে অল্প বয়সেই শুরু করতে হবে। আর গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ মাপা এবং রক্তে শর্করা দেখাটা জরুরি।
২১ বছর বয়স থেকে জরায়ুমুখ ক্যানসার স্ক্রিনিং শুরু করা উচিত। এ জন্য চিকিৎসককে দিয়ে পরীক্ষা করা যায়, সঙ্গে প্যাপস স্মেয়ার টেস্ট। প্রতি ৩ বা ৫ বছর পরপর করলে ভালো।
ব্রেস্ট সেলফ এক্সামিনেশন বা নিজে পরীক্ষা করা শিখে নিয়ে নিজে নিজে মাসে একবার নিজের স্তন পরীক্ষা করুন। এটা শুরু করা উচিত ২০ বছর বয়স থেকেই। যদি পরিবারে স্তন ক্যানসারের ইতিহাস থাকে বা স্তনে কোনো অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে, তবে আলট্রাসনোগ্রাফি বা ম্যামোগ্রাফি চিকিৎসকের পরামর্শে করতে পারেন। ৪০ বছরের আগে সাধারণত ম্যামোগ্রাফির কথা বলা হয় না।
এ ছাড়া বছরে অন্তত একবার দাঁত ও চোখ পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভালো।
৫০ বছরের পর কোলন ক্যানসার নির্ণয় করতে কলনোস্কোপি পরীক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়। তবে চিকিৎসকের সন্দেহ হলে এর আগেও করা যায়।
নিয়মিত বা রুটিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনেক অনির্ণীত রোগকে আগে নির্ণয় করতে সাহায্য করে। অনেক জটিলতাও এড়ানো যায়। মনে রাখবেন, পরিবারে নানা রোগের ইতিহাস, মুটিয়ে যাওয়া, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন ইত্যাদি আপনার নানা ধরনের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সময় থাকতেই সতর্ক হওয়া উচিত।