সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে চার কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ সড়ক দুর্ঘটনায় বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের মৃত্যুর ঘটনায় আনা ক্ষতিপূরণ মামলার রায়ে এ আদেশ দেন।
রায়ে বলা হয়, চালক, বাস মালিক ও বীমা কোম্পানিকে ওই অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।
এ মামলায় আদালতে তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদের পক্ষে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন।
চুয়াডাঙ্গা বাস মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সুবহান তরফদার ও রিলায়েন্স ইন্সুরেন্স কোম্পানির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল ইসরাত জাহান।
২০১৬ সালের ১৩ মার্চ হাইকোর্টে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। আদালতে ক্যাথরিন মাসুদের পক্ষে সাতজন, বাস মালিক সমিতির পক্ষে পাঁচজন ও রিলায়েন্স ইন্সুরেন্স কোম্পানির পক্ষে একজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ এবং এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন মর্মান্তিকভাবে নিহত হন।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। এরপর ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নিহতদের পরিবারের সদস্যরা মানিকগঞ্জে মোটরযান অর্ডিন্যান্সের ১২৮ ধারায় বাসমালিক, চালক ও ইনস্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে দুটি মামলা করেন।
সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে এ দুটি মামলা হাইকোর্টে বদলির নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করা হয়। তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ এবং মিশুক মুনীরের স্ত্রী কানিজ এফ কাজী ও ছেলে সুহৃদ মুনীর দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর রুল জারি করে হাইকোর্ট। এ রুলের শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর দুই আবেদন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী বিচারপতি জিনাত আরার নেতৃত্বাধীন এ হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলা দুটি শুনানি শুরু হয়। এর মধ্যে তারেক মাসুদের মামলার রায় হলো। অপরটির শুনানি ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি রয়েছে।