মৃত্যুর পরেও মুক্তি মেলেনি অস্ট্রেলীয় কয়েদির

Slider সারাবিশ্ব

ae22cdd1228e24ed99a7561efc7bfcaf-5a242a277b8ec

 

 

 

 

 

 

 

হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্রে (লাইফ সাপোর্ট) রাখা একজন রোগীর ছবি হঠাৎই সাড়া ফেলে গোটা অস্ট্রেলিয়ায়। ছবিটিকে প্রথম দেখাতে স্বাভাবিক মনে হলেও চোখের পলকেই হৃদয় নাড়িয়ে দেবে। আইসিইউতে একজন রোগীকে যেভাবে রাখা হয়, সেভাবেই ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক এরিক হুইটেকার। তবে তাঁর পায়ে ছিল শিকল।

সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের খবরে বলা হয়, ৩৬ বছর বয়সী হুইটেকার গত ৪ জুলাইয়ে পায়ে শিকলবন্দী অবস্থাতেই হাসপাতালে মারা যান। আর তাঁর মৃত্যুর আগের তোলা শিকলবন্দী ছবিটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে অস্ট্রেলিয়াজুড়ে। হেরে যাওয়া মানবতার লজ্জায় ক্ষোভে ফেটে পড়ছে দেশটির সর্বস্তরের মানুষ। ছবিটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘লজ্জার শিকল’।

গত ২৭ জুন নেশাগ্রস্ত ও গৃহহীন এরিক হুইটেকারকে চুরি যাওয়া মালসহ সর্বজনীন স্থানে ছুরি নিয়ে চলাফেরা এবং পূর্বের নোটিশ অনুযায়ী আদালতে হাজির না হওয়ার অপরাধে আটক করে পুলিশ। তাঁকে প্রথমে স্যারিহিল কারাগারে রাখা হয়। ৩০ জুন হুইটেকারকে সিডনির পার্কলিয়া কারাগার স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে রাখা হয়েছিল কড়া নজরদারিতে। এরপর ২ জুলাই স্থানীয় সময় সকাল আটটায় একজন জেল কর্মকর্তা বুঝতে পারেন, তাঁকে ভুলবশত জেলে আনা হয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে হুইটেকারের শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি ঘটে এবং চেতনা হারালে তাঁকে দ্রুত ওয়েস্ট মিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, হুইটেকারকে হাতকড়া লাগানো অবস্থাতেই গত কয়েক দিন একটি বিচ্ছিন্ন অন্ধকার সেলে রাখা হয়েছিল। তবে আইসিইউতে অচেতন হুইটেকারকে অবমুক্ত রাখেনি পুলিশ। তাঁর পায়ে শিকল বেঁধে দেয় তারা। আর এ ছবি এখন সারা অস্ট্রেলিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্থানে ইতিমধ্যে হুইটেকারের এমন করুণ দশার প্রতিবাদে বিক্ষোভও করেছে বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা ও সাধারণ জনগণ। তাঁরা বলছেন, ২০১৭ সালে এসেও একজন সাধারণ কয়েদিকে এভাবে শিকলবন্দী করে রাখা যায়! এটা মানবতার প্রতি চরম অসম্মান। হুইটেকারের পরিবারও তাঁর প্রতি অসম্মানজনিত মৃত্যুর জবাব জানতে চায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *